আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
অল ইন্ডিয়া মজলিশে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে নতুন দলে নাম লেখালেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। বুধবার পার্কসার্কাস এলাকার এক হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন এআইএমআইএম বা মিমের বিক্ষুব্ধ নেতারা। সেখানেই ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লিগের সভাপতি অধ্যাপক মহম্মদ সুলেমান, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মৌলানা আলি হুসেন কুম্মির উপস্থিতিতে সদ্য মিম থেকে পদত্যাগ করা নেতা সৈয়দ জামিরুল হাসান দলবদল করেন।
নিজের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘ছ’বছর ধরে এআইএমআইএম করেছি। ভাল সংগঠন করেছিলাম। ওয়াইসি সাহেব আমাদের না জানিয়ে মিমের দায়িত্ব দিয়ে আসেন আব্বাস সিদ্দিকির হাতে। তিনি যদি ভাল লোককে দায়িত্ব দিতেন, তা হলে মেনে নিতাম। আমাদের নেতা-কর্মীরা ভাল ভাবে নেননি। মিমের সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত করেও আব্বাস বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের আলোচনা চালিয়েছেন অন্তরালে। এই বিষয়টিকে আমরা মেনে নিতে পারিনি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট গড়ে তিনি কংগ্রেস ও বামদের সঙ্গে জোট গড়েছেন। কিন্তু মাত্র ১-২ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আব্বাসের। শুধু ওয়াইসি সাহেব আমাদের উপেক্ষাই করেননি, ভোটের সময় আমাদের অথৈ জলে ফেলে দিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই দলবদল করলাম।’’
প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারি রাজ্যের নেতাদের না জানিয়েই ফুরফুরা শরিফে এসেছিলেন আসাদউদ্দিন। পরে একযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করে আব্বাস ও আসাদ জানিয়েছিলেন, পরস্পরের হাত ধরেই এ রাজ্যে ভোটে লড়াই করবে মিম। কিন্তু শেষে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে মিমের হাত ছেড়ে দেন আব্বাস। এর পর মিমের শীর্ষ নেতারা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই মেটিয়াবুরুজে সভা করার কথা ঘোষণা করেন। যদিও, পুলিশি অনুমতি না মেলায় ২৬ ফেব্রুয়ারি সেই সভা হয়নি।
এর পর মিমের জাতীয় মুখপাত্র মাজিদ হুসেন জানান, শীঘ্রই কলকাতায় এসে জনসভা করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবেন। কিন্তু ঘোষণাই সার, তার পর থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব আর রাজ্য নেতাদের সঙ্গে তিনি কোনও যোগাযোগ করেননি বলেই অভিযোগ। তার জেরেই একঝাঁক মিম নেতা দলবদল করলেন। নতুন দলে যোগ দিয়েও তাঁরা ভোটে লড়াই করবেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লিগের সভাপতি অধ্যাপক মহম্মদ সুলেমান বলেছেন, ‘‘রাজ্যের মানুষ চাইলেই ভোটে লড়ব।’’