মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তার পদ থেকে বিবেক সহায়কে অপসারণের প্রতিবাদ করে রবিবার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উত্তরে মঙ্গলবার পাল্টা চিঠি পাঠালেন উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। চিঠিতে সুদীপ জানান, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলছেন, তা মেনে নেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ওই ধারণা জিইয়ে রেখে কমিশনকে খাটো করার চেষ্টা করছেন। কেন এমন করছেন তা তিনিই জানেন।” তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে এমন চিঠি লেখার এক্তিয়ার সুদীপ জৈনের নেই।’’
বিবেককে অপসারণ করলে নিরাপত্তায় কী কি অসুবিধা হতে পারে, চিঠিতে তা বলার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার কথা নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতার কথা জানিয়ে এও বলেছিলেন, রাজ্যের সমান্তরাল প্রশাসন চালানো কমিশনের উচিত নয়। মমতার এই অভিযোগগুলিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সুদীপ জৈন। তিনি পাল্টা চিঠিতে বলেছেন, কমিশন সব দলকেই সমান গুরুত্ব দেয়। তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কত বার বৈঠক হয়েছে, সেই তথ্য দিয়ে সুদীপ লিখেছেন, ‘তার পরেও এ ভাবে কথা বলার অর্থ কটাক্ষ এবং কাজে বাধা দেওয়া। বারংবার এই ধরনের অভিযোগ তুলে কমিশনকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। কমিশন নিরপেক্ষ অবস্থানে কাজ করছে সব দলের সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রেখে।’
মমতা তাঁর চিঠিতে বলেছেন, বিবেক তাঁর আগাম কর্মসূচি জানতেন। ওই পদে বদল করায় নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গোটা ঘটনায় বিবেকের দোষ ছিল না বলে তিনি দাবি করেছেন। যদিও সুদীপ জানিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যসচিব, কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক ও বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। রিপোর্টগুলির বিশেষ অংশ তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। প্রসঙ্গত, রাজ্যকে কমিশনের নির্দেশ ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাদানে ব্যর্থ হয়েছেন বলে এক সপ্তাহের মধ্যে বিবেক সহায়ের বিরুদ্ধে ‘চার্জ’ গঠন করতে হবে। এমনকি, নিরাপত্তা অধিকর্তার অধস্তন অফিসারদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করতে বলেছিল কমিশন। আজ বুধবার, সেই রিপোর্ট দেওয়ার কথা রাজ্যের।