নন্দীগ্রামে আঘাত পাওয়ার পর যন্ত্রণায় কাতর মমতা। ছবি— পিটিআই।
নন্দীগ্রামে চোট পেয়ে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধাক্কা মেরে তাঁকে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মমতা। এই ঘটনার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি-তৃণমূলের চাপানউতর চরমে পৌঁছেছে। তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বিজেপি মমতার আহত হওয়ার ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ বলতেও পিছপা হয়নি। পাল্টা তৃণমূলের নিজস্ব টুইটার হ্যান্ডল থেকে করা টুইটে লেখা হয়েছে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চুপ করাতে তাঁর উপর আক্রমণ এই প্রথম নয়’।
ওই টুইটে লেখা হয়েছে, ‘মমতাকে চুপ করাতে তাঁর উপর আক্রমণ এই প্রথম নয়। এর আগেও তা হয়েছে। কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বহু বার তাঁর উপর আক্রমণ হয়েছে। কিন্তু এ সব কোনও কিছুই তাঁর ইচ্ছাকে দমাতে পারেনি। আপনার বার্তা ছড়ানোর জন্য তিনি ছিলেন, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন’।
এই টুইটের মাধ্যমে বাম জমানা এবং বিভিন্ন সময়ে মমতার উপর হওয়া আক্রমণকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছে তৃণমূল। ১৯৯০ সালের ১৬ অগস্ট মমতার উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তখনও তৃণমূল গঠিত হয়নি। মমতা সে সময় কংগ্রেসের যুব নেত্রী। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানে গুলি চালিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়। ওই দিনটির স্মরণেই তৃণমূল পালন করে শহিদ দিবস। এর পর সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের সময়ও বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল মমতাকে। ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে মমতা ও তাঁর অনুগামীদের ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তার পর বিধানসভা ভাঙচুরও করেন তৃণমূল বিধায়করা। এর পরই শুরু হয় মমতার ২৬ দিন ব্যাপি অনশন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে বিরোধী নেত্রী মমতা বিভিন্ন বাধার মুখে যে ভাবে লড়াই করেছেন সেই বিষয়টিই বুধবার রাতের টুইটে তুলে ধরা হয়েছে।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনই ২০১১ সালে মমতার ক্ষমতা দখলকে ত্বরান্বিত করেছিল। বিধানসভা ভোটের আগে সেই নন্দীগ্রামেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর আহত হলেন মমতা। এসএসকেএমে মমতাকে দেখতে এসে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। নির্বাচন কমিশনও বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। যদিও বিজেপি-র রাজ্য স্তরের কিছু নেতা মুখ খুললেও, এই ঘটনার পর কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি অমিত শাহ বা নরেন্দ্র মোদীকে। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী এবং মমতার এক সময়ের ছায়াসঙ্গী শুভেন্দুও কিছু বলেননি এই ঘটনা নিয়ে।