আনন্দ শর্মা এবং আব্দুল মান্নান। ফাইল চিত্র।
বাম-কংগ্রেস জোটে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে কংগ্রেস-এর অভ্যন্তরীণ কোন্দল তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিদায়ী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে ফোন করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন।
ঘটনাচক্রে, সোমবার কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের প্রশ্ন তুলে টুইটারে আইএসএফ-এর মত ‘মৌলবাদী শক্তি’র সঙ্গে হাত মেলানোর বিরোধিতা করেছিলেন আনন্দ। যা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে পাল্টা খোঁচা দিয়েছিলেন আনন্দকে। মঙ্গলবার আদর্শগত মতপার্থক্য বিতর্কে প্রদেশ কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়ে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা বঢরা বলেন, ‘‘কোনও জোটের শরিকরা কখনও সব বিষয়ে একশো শতাংশ একমত হতে পারে না।’’
মান্নান মঙ্গলবার ফোন প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আনন্দ আমাকে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, কোন পরিস্থিতিতে আইএসএফ-কে বাম-কংগ্রেস জোটে সামিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমি তাঁর কাছে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছি।’’ স্থায়ী সময়ের সভাপতি চেয়ে সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লেখা কংগ্রেসের অন্দরে বিক্ষুব্ধ ২৩ নেতার অন্যতম আনন্দের এই ফোন ‘সঙ্ঘাত এড়ানোর প্রচেষ্টা’ বলেই মনে করছে প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ
আনন্দও আইএসএফ-বিতর্কের সরাসরি উল্লেখ না করে একটি টুইটে তাঁর (এবং বিক্ষুব্ধ শিবিরের) অবস্থান ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা বলতে চেয়েছি। আর সেটা সত্যি। আমরা যা বলেছি,তা সঠিক নজরে দেখা প্রয়োজন। আমরা দলকে শক্তিশালী করতে চাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ কংগ্রেসের পক্ষে। আমরা এমন কিছু করতে চাই না যা দলকে দুর্বল করবে’। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে একটি টুইটে কৃষক আন্দোলন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণও করেন তিনি।
ব্রিগেডের সভার পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ টুইটারে লিখেছিলেন, ‘আইএসএফ-এর মতো শক্তির সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা নেহরু-গাঁধীর ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবনার সঙ্গে মেলে না। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কখনও বাছ-বিচার করতে পারে না’। তাঁর সংযোজন, ‘ওই মঞ্চে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি ও সমর্থন বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক! তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত’।
আনন্দের অভিযোগের জবাবে অধীর সোমবার বলেন, ‘‘এই মন্তব্য (আনন্দের) বেদনাদায়ক ও দুর্ভাগ্যজনক! সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, বিমান বসুরা সকলেই মঞ্চে ছিলেন। তাঁরা সবাই ‘মৌলবাদী শক্তি’র হাত ধরলেন, এমন ধারণা কী করে হল, ভাবতে অদ্ভুত লাগছে।’’ হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস নেতা আনন্দের কয়েক মাস পরেই তাঁর সাংসদ পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে অধীরের খোঁচা, ‘‘হয়তো অন্য কোনও দল থেকে রাজ্যসভার টিকিট পেতে পারেন। সেই কারণেই উনি এমন কথা বলছেন।’’ বিষয়টি নিয়ে ‘তথ্য জেনে নিন’ আনন্দ শর্মাজি’ শীর্ষক ধারাবাহিক টুইটও করেন অধীর। দাবি করেন, কংগ্রেস তার দাবি মতো জোটের কাছ থেকে ৯২টি আসনই পেয়েছে। বামের তাদের ভাগ থেকে আইএসএফ-কে আসন ছাড়ছে।