জামুড়িয়ায় বুথে তালা গ্রামবাসীদের। — নিজস্ব চিত্র।
১৩ মে সোমবার ভোট আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে। তার ঠিক আগের দিন উত্তেজনা ছড়াল ওই লোকসভার অন্তর্গত জামুড়িয়ায়। বুথের তালা খুলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। ভোটকর্মীদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে ঠিকই, কিন্তু লো-ভোল্টেজের সমস্যা নিত্যসঙ্গী। প্রবল গরমে দরদর করে ঘাম ঝরলেও ঘরের পাখা ঘোরে শামুকের গতিতে। আলো জ্বাললেও কাটে না অন্ধকার। দীর্ঘদিন ধরে নেতা, মন্ত্রীদের কাছে দরবার, সরকারি কার্যালয়ে হত্যে দিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মিলেছে কেবল শুকনো পরামর্শ, আশ্বাস। এ বার এলাকাবাসীর সেই রাগ ফেটে বেরোল ভোটের মুখে। জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের ২৭৯ জামুড়িয়া বিধানসভার তপসির জানবাজার গ্রামের ২৪৩ নম্বর বুথে পৌঁছতেই তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু। গ্রামবাসীদের দাবি, জেনারেটর লাগিয়ে ভোট করতে দেবেন না তাঁরা। লো-ভোল্টেজের কারণে গরমে হাঁসফাঁস করেন গ্রামবাসীরা। তাই বুথ কর্মীদেরও গ্রামবাসীদের মতোই বিদ্যুৎহীন অবস্থায় গরমে ঘামতে ঘামতে ভোট করাতে হবে। বুথের ফটকে তালাও মেরে দেন গ্রামবাসীরা।
জানবাজার দাসপাড়ার বাসিন্দা শান্তি হেমব্রম বলেন, ‘‘আমরা চাই, আমরা যেমন রোজ অন্ধকারে গরমে কষ্ট পাই, এক দিন ভোটকর্মীরাও সেই পরিস্থিতির মধ্যে থেকে ভোট করান। সেই কারণেই আমরা জেনারেটর নামাতে দিইনি। আমরা ভোট বয়কটের ডাক দিইনি। সবাই মিলে ভোট দেব। কিন্তু ভোটকর্মীদের জেনারেটরহীন অবস্থায় কাজ করিয়ে প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিতে চাই, ঠিক কোন অবস্থার মধ্যে আমাদের বেঁচে থাকতে হয়।’’
শান্তি জানাচ্ছেন, বাড়িতে লো-ভোল্টেজের সমস্যার কারণে তাঁর সন্তানরা পড়াশোনা করতে পারে না। শান্তিকে রান্না করতে হয় টর্চ জ্বালিয়ে। তিনি চাইছেন ভোটকর্মীরাও অন্ধকারেই ভোট করান। তাই জেনারেটর নামাতে দেননি। এ নিয়ে বুথের সামনে উত্তেজনা তৈরি হয়। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চলে আসে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ নিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নমবলমের আশ্বাস, তিনি বিষয়টি খবর নিয়ে দেখবেন।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব ইসিএলের। লো-ভোল্টেজের সমস্যার সঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের কোনও সম্পর্ক নেই।