ভাটপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদী। ছবি: পিটিআই।
অর্জুন সিংহের গড় ব্যারাকপুরের প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মূল তাস ছিল ধর্মীয় মেরুকরণ। তাঁর ২৭ মিনিটের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বার বার উঠে এসেছে ধর্মের প্রসঙ্গ। রামনবমী থেকে শুরু করে হিন্দু, মুসলমান— শব্দগুলি একাধিক বার ব্যবহার করেছেন তিনি। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ তিনি বাংলায় করতে দেবেন না।
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে ভাটপাড়ার সভা থেকে মোদী বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে কী হচ্ছে, সারা দেশ দেখছে। তৃণমূলের পুলিশ ওদের বাঁচিয়েছে। নতুন খেলা শুরু করেছে। ওদের গুন্ডা সন্দেশখালির বোনেদের ভয় দেখাচ্ছে। কারণ অত্যাচারীর নাম শাহজাহান শেখ। ওঁকে ক্লিনচিট দিতে চায় তৃণমূল।’’
মোদী বলেন, ‘‘এখানে ওএমআর শিট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভুয়ো ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সরকারের আমলে শুধু দুর্নীতি হয়েছে। বাংলার এই লুটের পাইপয়সার হিসাব নেব। কাউকে ছাড়া হবে না। বাংলার ভুক্তভোগীদের বলতে চাই, মোদী আছে। দুর্নীতিগ্রস্তেরা কেউ বাঁচতে পারবে না।’’
ভাটপাড়ার সভা থেকে বাংলার মানুষের জন্য পাঁচটি গ্যারান্টি দিলেন মোদী—
মোদী কর্নাটকের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘কর্নাটকে কংগ্রেস ওবিসিদের সংরক্ষণ সব মুসলমানদের দিয়ে দিয়েছে। বাংলাতেও আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। ভোটব্যাঙ্কের এই রাজনীতি সিএএ-র মতো আইনকে ‘ভিলেন’ বানিয়ে দিয়েছে।’’
মোদী জানান, হিন্দুদের উপর অত্যাচার বাংলায় বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলায় হিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। হিন্দুদের ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এত বড় সাহস! আদিবাসী, দলিতদের সঙ্গে অন্যায় এই দেশ মেনে নেবে না।’’
ভাটপাড়ায় মোদী বলেন, ‘‘বাংলায় রামের নাম নিতে দেয় না তৃণমূল সরকার। রামনবমী পালন করতে দেয় না। কংগ্রেস আর বামফ্রন্টও রামনবমীর বিরুদ্ধে। এমন লোকজনের হাতে এই মহান দেশ তুলে দেওয়া যায় কি?
ভাটপাড়ার সভা থেকে বাংলায় ভাল ফলের আশা প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী। সমাবেশে জনসমাগম দেখে তিনি জানান, বাংলায় ২০১৯-এর থেকেও ভাল ফল করবে বিজেপি।
শনিবার রাতে মোদীর কলকাতায় পৌঁছনোর পরেই সন্দেশখালির আরও একটি ‘স্টিং ভিডিয়ো’ প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানেও দেখা গিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে।আগেরটির মতো এই ভিডিয়োটিরও সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। তবে এই ভিডিয়ো নিয়ে নতুন করে অস্বস্তিতে বিজেপি।
মোদীর প্রথম সভাটি সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ, উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায়। সেখানে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহের হয়ে সভা করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় সভাটি চুঁচুড়ায়। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে ওই সভা। বিজেপি সূত্রে খবর, মোদীর দ্বিতীয় সভাটি হবে দুপুর ১টা নাগাদ। চুঁচুড়ায় সভা করার পরেই দুপুর আড়াইটে নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় সভাটি শুরু হওয়ার কথা। এই সভাটি তিনি করবেন আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পুড়শুড়ায়। বিজেপি প্রার্থী অরূপকান্তি দিগরের সমর্থনে ওই সভা। মোদীর চতুর্থ এবং দিনের শেষ সভাটি হবে হাওড়া জেলার সাঁকরাইলে। বিকেল ৪টে নাগাদ এই সভাস্থলে পৌঁছনোর কথা রয়েছে তাঁর। এই সভা থেকে হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীর সমর্থনে প্রচার করবেন তিনি।