গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মহারাষ্ট্রের ১৭টি আসনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা (ইউবিটি) প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই ‘একলা চলো’র কথা ঘোষণা করলেন ‘বঞ্চিত বহুজন অঘাড়ী’ (ভিবিএ)-র প্রধান তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রকাশ অম্বেডকর।
বিআর অম্বেডকরের পৌত্র প্রকাশ বুধবার আটটি লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, রাতে রামটেক আসনেও প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হবে। প্রকাশ নিজে লড়বেন অকোলা কেন্দ্রে। ১৯৯৮ সালে ওই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন তিনি। গত বার একা লড়ে সেখানে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলেন।
প্রকাশ বুধবার অভিযোগ করেন, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, শিবসেনা (ইউবিটি) এবং এনসিপি (শরদ পওয়ার)-র জোট ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ (এমভিএ)-র আসন সমঝোতা নিয়ে তাঁদের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষত তাঁর নিশানায় ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবের দল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আলোচনার জন্য অনেক সময় ব্যয় করেছি। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’’
তবে এমভিএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও তাঁরা আগের ঘোষণা মতোই কয়েকটি আসনে কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের দলিত নেতা। উদ্ধব শিবিরের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বুধবার প্রকাশের ‘একলা চলো’ ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওঁরা আমাদের কাছে ২৫টি আসনের তালিকা দিয়েছিলেন। আমরা তার মধ্যে থেকে পাঁচটি ছাড়ব বলেছিলাম। এর বেশি আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রকাশজি বিচক্ষণ নেতা। উনি আলাদা লড়লে তার সুফল কারা পাবে, তা তিনি জানেন।’’
এরই মধ্যে মুম্বইয়ের কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সঞ্জয় নিরুপম বুধবার তোপ দেগেছেন উদ্ধব শিবিরের উদ্দেশে। এমনকি, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিরও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মুম্বইয়ের একটি আসন থেকে সঞ্জয় লড়তে চাইলেও তাতে উদ্ধব শিবির আপত্তি জানিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি আর এক সপ্তাহ অপেক্ষা করব। তার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার শিবসেনা (ইউবিটি)-র বিরুদ্ধে ‘একতরফা এবং অবাঞ্ছিত’ আচরণের অভিযোগ তুলেছিলেন প্রকাশও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মনে করছি শিবসেনা (ইউবিটি)-র সঙ্গে সমঝোতা সম্ভব নয়।’’
মরাঠওয়াড়া, পশ্চিম মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অংশে দলিত জনগোষ্ঠীর উপর প্রভাব রয়েছে প্রকাশের। কট্টর বিজেপি-বিরোধী হিসাবে পরিচিত এই নেতা একদা কংগ্রেসের সহযোগী ছিলেন। অকোলা থেকে ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে দু’বার লোকসভা ভোটেও জিতেছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর সঙ্গে জোট গড়েছিলেন তিনি। প্রকাশ অকোলার পাশাপাশি শোলাপুর লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে হেরে গেলেও পেয়েছিলেন এক লক্ষ ৭০ হাজার ভোট। প্রকাশের কারণেই ওই কেন্দ্রে বিজেপির কাছে হেরে যান কংগ্রেস প্রার্থী তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে।