CBI Raid In Sandeshkhali

‘ফাঁকা’ সন্দেশখালিতে কেন ভোটের দিন সিবিআই হানা? কেন অন্ধকারে রাজ্য? তৃণমূলের চিঠি কমিশনকে

তৃণমূলের অভিযোগ, শুক্রবার যখন বাংলার তিন লোকসভা আসন— দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটে ভোট হচ্ছে, তখন সিবিআই ‘ফাঁকা সন্দেশখালিতে’ অভিযান চালিয়েছে। এনএসজিকে ডেকেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫৯
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

দ্বিতীয় দফা ভোটের দিন উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে সিবিআই হানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল তৃণমূল। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ভোটের সময় বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হানায় তৃণমূল-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটি নির্দেশিকা দিক কমিশন।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতার অফিস থেকে ‘মিশন সন্দেশখালি’ শুরু করে সিবিআই। গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে ইডির আক্রান্ত হওয়ার মামলার প্রেক্ষিতে ওই অভিযান চলে। কখনও শাহজাহান- ঘনিষ্ঠের বাড়ি ঘিরে ধরে তল্লাশি, আবার কখনও মাঠে-ময়দানে বোমা, অস্ত্রের খোঁজে খানাতল্লাশি। সিবিআই সূত্রে খবর ছিল, অস্ত্র মিলেছে শাহজাহানের পাড়ায়। সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতার এক ঘনিষ্ঠের আত্মীয় জনৈক আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে উদ্ধার হয় বেশ কিছু অস্ত্র। এই সময় সিবিআই ডেকে পাঠায় এনএসজিকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সন্দেশখালিতে চলে আসেন এনএসজি কম্যান্ডোরা। আসে অত্যাধুনিক বিস্ফোরক সন্ধানী রোবটও। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতেই কমিশনকে এই চিঠি দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তাদের অভিযোগ, ভোটের সময় কেন্দ্রীয় সংস্থার বার বার অতি সক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ করা হলেও কমিশন তা দেখেও দেখেনি। তার মধ্যে শুক্রবার যখন বাংলার তিন লোকসভা আসন— দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটে ভোট হচ্ছে, তখন ‘নির্লজ্জ ভাবে’ সিবিআই ‘সন্দেশখালির ফাঁকা জায়গায়’ অভিযান চালিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পরে তারা অতিরিক্ত আধিকারিক, বম্ব স্কোয়াড এবং এনএসজি-কে ডেকেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে একটি বাড়ি থেকে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

বস্তুত, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের জারি করা প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ইডির জিনিসপত্র এবং আরও কিছু সন্দেহজনক জিনিস লুকিয়ে রাখা হতে পারে শাহজাহানের অনুগামীদের বাড়িতে, এই খবর পেয়ে তারা তল্লাশি অভিযান শুরু করে। যে দিন ইডির উপর হামলার ঘটনা ঘটে, সে দিনই ইডির বেশ কিছু জিনিস সেখানকার জনতা আটক করে বলে অভিযোগ। সেই সব জিনিস খুঁজতেই ছিল শুক্রবারের অভিযান। পরে বলা হয়, সন্দেশখালিতে শাহজাহান অনুগামীদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র, শাহজাহানের সচিত্র পরিচয়পত্র এবং বেশ কিছু নথি। তৃণমূল জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি রাজ্যের বিষয়। কিন্তু, সিবিআই রাজ্য সরকার কিংবা পুলিশকে না-জানিয়েই হানা দিয়েছে। বরং পুলিশকে জানানো হলে তাদের যে বম্ব স্কোয়াড রয়েছে, তা ওই অভিযানে সাহায্য করতে পারত। কিন্তু সে সব কিছু করা হয়নি। পুলিশের কোনও সহায়তা চাওয়া হয়নি। বরং সেই অভিযানের সময় সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি অবাক করেছে তৃণমূলকে। শাসকদলের দাবি, সিবিআই অভিযানের খবর আগেই সংবাদমাধ্যমের কাছে ছিল। এ ব্যাপারে তাদের জানানো হয়েছে, কিন্তু রাজ্যকে অভিযানের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি।

Advertisement

কমিশনকে দেওয়া চিঠির শেষাংশে রাজ্যের শাসকদল লিখেছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিনিয়ত তৃণমূলকে ‘টার্গেট’ করছেন ভোটের সময়। বিশেষত, সিবিআইকে তাঁরা পরিচালনা করছেন। সন্দেশখালিতে অভিযান তার আর একটি প্রমাণ। কী ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করা যায় সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে, সেই চেষ্টা করছে কমিশন। তাই এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করার আর্জি জানাচ্ছে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement