—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নির্বাচনী আচরণবিধি চলছে। তারপরেও বৈঠক ডেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। মহিলাদের থেকে নথিও নেওয়া হচ্ছে! এমনই অভিযোগ উঠছে নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর পঞ্চায়েত এলাকায়।
ওই সব বৈঠকে নাকি তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে টাকা বেড়েছে। সেটা পেতে গেলে জমা করতে হবে প্রয়োজনীয় নথি। যাঁরা জমা করবেন না, তাঁদের টাকা বাড়বে না। অভিযোগ, মহিলাদের কাছ থেকে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবই ও জাতিগত শংসাপত্রের জেরক্স নেওয়া হচ্ছে। বৈঠকগুলিতে মাঝে মধ্যে থাকছেন মকরামপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তরুণ পাহাড়ি ও দলের পঞ্চায়েত সদস্যরাও। বিষয়টি কমিশনের দৃষ্টিতে এনে পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথে এমন বৈঠক চলছে। বেল্টি, তালা, ডহরপুর, মকরামপুর, রামপুরা, মুড়াকাটা, মলকা প্রভৃতি বুথে ইতিমধ্যেই ওই বৈঠক হয়েছে। বেশিরভাগ বৈঠক হচ্ছে বিকেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক মহিলা জানিয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় নথির জেরক্স নিয়ে যেতে বলা হচ্ছে। সেগুলো জমা নেওয়া হচ্ছে। এক মহিলা বলেন, ‘‘বৈঠকে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় নথি জমা না করলে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা নাকি বাড়বে না। এমনটাই জানিয়েছে তৃণমূল। তাই যা চেয়েছে জমা দিয়েছি।’’ কোথাও কোথাও নথির সঙ্গে ১০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
মকরামপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তরুণ পাহাড়ি অবশ্য বলেন, ‘‘এটা শাসকদলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক কাজ। এটা তো হতেই পারে।’’ নথি নেওয়া হচ্ছে কেন? তাঁর জবাব, ‘‘মহিলাদের নিয়ে একটি রেজিস্টার তৈরির জন্য নথি নেওয়া হচ্ছে। এতে অভিযোগের কিছু নেই।’’ মকরামপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি লক্ষ্মী শীটের দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বাড়িয়েছে। একথাই প্রচার করা হচ্ছে। এতে বিরোধীদের কী অসুবিধা হচ্ছে। মানুষ সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন এটা তো ঠিক! কে কোথায় বৈঠক করছে জানি না। বৈঠক তো আর দলীয় কার্যালয়ে হচ্ছে না।’’ নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার জানা বলছেন, ‘‘কী হয়েছে বা কারা নথি চাইছেন জানা নেই। দলের কেউ যদি এটা করে থাকলে সেটা ঠিক নয়। খোঁজ নেওয়া হবে।’’
লোকসভা ভোটের আগে এই নিয়ে সুর চড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘এটা তো নির্বাচন বিধিভঙ্গের আওতায়। সরকারি প্রকল্পের প্রাপকদের নথি এভাবে তৃণমূল চাইতে পারে না। বৈঠকও করতে পারে না। আমরা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানাচ্ছি।’’