—প্রতীকী চিত্র।
এ বার গণনাকেন্দ্রেও ‘ভূত’ দেখছে বিজেপি। এ নিয়ে বিজেপির তরফে কমিশন, জেলা প্রশাসন এবং পর্যবেক্ষকদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগে বিজেপি অভিযোগ তুলেছিল, ভোটার তালিকায় ‘ভূত’ অর্থাৎ, ‘ভুয়ো’ ভোটার রয়েছে। এ বার বিজেপির শঙ্কা, সরকারি কর্মী পরিচয়ে যাঁরা ভোট গণনা করতে যাবেন, তাঁদের মধ্যে সকলে সরকারি কর্মী না-ও হতে পারেন। পরিচয় ভাঁড়িয়ে তৃণমূলের পেশাদার দল ঢুকতে পারে গণনাকেন্দ্রে। যদিও এই আশঙ্কার কোনও ভিত্তি নেই বলে দাবি নির্বাচন পরিচালনাকারী সরকারি ‘সেল’গুলির। তাদের দাবি, গণনাকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পরিচয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন আগাম যাচাই করে। কমিশনের এই বার্তার পরেও বিজেপি ‘নিশ্চিন্ত’ নয়। অন্য দিকে, তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপি নিজেদের হার নিশ্চিত বুঝেই এখন এ সব অভিযোগ তুলছে।
এ বারে জলপাইগুড়ি আসনে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে নানা ডামাডোল দেখেছে বিজেপি। ভোটের পরে, দলীয় বিশ্লেষণী বৈঠকে গত লোকসভার চেয়ে ভোট কমবে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে তারা। এ বার গণনাকেন্দ্র নিয়েও ‘দুশ্চিন্তায়’ প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে জেলা বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী সোমবার বলেন, “আমাদের কাছে খবর আছে, সরকারি কর্মী পরিচয় দিয়ে তৃণমূলের পেশাদার বাহিনীকে গণনা কেন্দ্রে ঢোকানো হতে পারে। তাই বলেছি, যাঁরা গণনা করতে যাবেন, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা যেন আগে থেকে প্রকাশ করা হয়, যে ভাবে ভোটকর্মীদের তালিকা সকলে জানতে পারেন সে ভাবেই। নির্বাচন কমিশন, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং পর্যবেক্ষকদের একই চিঠি দিয়েছি।”
বিজেপির আশঙ্কার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাচনের বিশেষ দায়িত্ব সামলানো এক আধিকারিক বলেন, “এমন হয় নাকি! সরকারি কর্মী না হলে পোর্টালে তাঁর নামই উঠবে না। এটা হতে পারে না। কে গণনা করতে যাবেন, আগেভাগে তা জানানোর নিয়ম নেই।” সরকারি নিয়ম অনুসারে, যাঁরা ভোটের কাজ করবেন, তাঁদের নাম কমিশনের পোর্টালে তুলতে হয় ও কমিশনকে জানাতে হয়। সেখানে নাম তোলার সময়ে কে, কোন দফতরে কর্মরত তা নিয়ে স্পষ্ট তথ্য থাকতে হয়। তার পরে ভুয়ো পরিচয়ে কাউকে ঢোকানো কার্যত অসম্ভব বলে দাবি।
যদিও বিজেপি কমিশনের যুক্তি মানতে রাজি নয়। জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক তথা জেলা বিজেপির নেত্রী শিখা চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “এর আগের ভোটে (বিধানসভা) কিছু কেন্দ্রে গণনায় তো তা-ই হয়েছে। সব কেন্দ্রে অবশ্য পারেনি। এ বারও করতে পারে, তাই আমরা সর্বস্তরে জানিয়েছি।’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া গোপের কটাক্ষ, “বিজেপি ভয় পেয়েছে। ওরা চাইছে, গণনাই বন্ধ করে ওদের জয় ঘোষণা করে দিতে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। তাই হারের ভয়ে সর্বত্রই জুজু দেখছে ওরা।”