—প্রতীকী ছবি।
মা মানুষ মিট্টি/ দো ডালি ছয় পাত্তি।
হিন্দি এবং বাংলার সংমিশ্রণে এই স্লোগানেই প্রচার চালাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের ভাদোহি থেকে দাঁড়ানো তৃণমূলের প্রার্থী ললিতেশপতি ত্রিপাঠী। আজ হাজারখানেক মানুষের মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠীর এই বংশধর।
এসপি-র সমর্থনে লড়ছেন ললিতেশপতি। এসপি নেতা অখিলেশ যাদব, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছিলেন, উত্তরপ্রদেশে প্রচারে আসার জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা খবর, পশ্চিমবঙ্গের সবগুলি আসনের প্রচার সামলে ভাদোহি বা
লখনউয়ে আসা সম্ভব হবে না মমতা বা সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বর পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হককে। তিনি এক সপ্তাহ ধরে তাঁবু গেড়েছেন ভাদোহিতে।
হক বললেন, ‘‘এসপি-র নেতা এবং কর্মী সমর্থকদের পূর্ণ সহযোগিতা পাচ্ছি আমরা। ললিতেশ এই নির্বাচনী ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিচিত এব জনপ্রিয়। তিনি উত্তরপ্রদেশের এক রাজনৈতিক ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। তাঁর বাবার দাদু ছিলেন কমলাপতি ত্রিপাঠী। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য হলেও এর আগে কংগ্রেসে ছিলেন। তিনি প্রিয়ঙ্কা গান্ধীরও ঘনিষ্ঠ। আবার অখিলেশ যাদবের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে তাঁর। সব মিলিয়ে ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধি হিসাবে ভালই লড়াই দেবেন বিজেপির সঙ্গে।’’
প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার জন্য কী কী করেছেন, তার খতিয়ান দিচ্ছেন ললিতেশ। বক্তৃতায় এবং মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে কথাবার্তায় উঠে আসছে লক্ষীর ভান্ডার, সবুজ সাথী, কৃষকবন্ধু প্রকল্পে কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গবাসী লাভবান হয়েছেন, তার বৃত্তান্ত। বারাণসী থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরের এই ভাদোহির মানুষের প্রধান পেশা কার্পেট বানানো। কিন্তু জিএসটি এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের কোমর ভেঙে দিয়েছে বলে আঞ্চলিক স্তরে ক্ষোভ রয়েছে। পাশাপাশি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানো, সারের দাম বৃদ্ধি, মূল্যবৃদ্ধির ফলে চাষের কাজে সমস্যা, কৃষক, শ্রমিকদের গ্রাম ছেড়ে জীবিকার সন্ধানে শহরের দিকে চলে যাওয়ার মতো বিষয়গুলিও রয়েছে। যার জেরে কয়েক মাস আগে ভাদোহিতে আসা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে কালো পতাকা দেখিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে কংগ্রেসের টিকিটে উত্তরপ্রদেশের মাদিহান বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন ললিতেশ। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে হেরে যান। পরে ‘অবহেলা’র অভিযোগ করে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজে তাঁকে তৃণমূলের সদস্যপদ দিয়েছিলেন। লোকসভা কেন্দ্র হিসাবে ভাদোহির অস্তিত্ব তৈরি হয় ২০০৯ সালে। মায়াবতীর দল বহুজন সমাজ পার্টি প্রথম ওই আসন জেতে। তার পর থেকে পর পর দু’বছর এই লোকসভা আসনে জেতে বিজেপি।