—প্রতীকী ছবি।
সন্দেশখালির ‘ধাক্কা’ সামলাতে ভোট-বাক্সে মহিলা-সমর্থন ধরে রাখতে নড়েচড়ে বসল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক হিসেবে তারা মহিলাদের জন্য যে প্রকল্প করেছে, তা নিয়েই রাজ্যের সব বাড়িতে পৌঁছনোর কর্মসূচি নিচ্ছে দলের মহিলা শাখা। মহিলা প্রার্থীদের নিজের কেন্দ্রের ‘লক্ষ্মী’ হিসেবে তুলে ধরে প্রচারের পরিকল্পনাও হয়েছে। প্রচারে সব বাড়িতে সরকারি পরিকল্পনা সম্পর্কিত একটি স্টিকারও লাগাবেন তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা।
ক্ষমতায় আসার সময় থেকেই মহিলা ভোটের বেশির ভাগ তৃণমূলের পক্ষে। দলের এই হিসাব লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালি নিয়ে ওঠা অভিযোগে কিছুটা নড়ে গিয়েছে। শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের হাতে মহিলাদের নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণের মুখে পাল্টা প্রচারে জোর দিচ্ছে তৃণমূল। বিজেপিও এ বার তৃণমূলের মহিলা-সমর্থনে ভাঙন ধরাতে বাড়তি সক্রিয় হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে এসে ‘নারী শক্তি সম্মান’ সমাবেশ করে মহিলাদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা ব্যাখ্যা করে গিয়েছেন। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পের প্রচারে সব বাড়িতে প্রতিনিধি পাঠাতে চায় তৃণমূলের মহিলা শাখা।
সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, ‘‘মহিলাদের নিগ্রহের ঘটনা ঘটলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সব সময় কঠোর পদক্ষেপ করেছে। সন্দেশখালিতে জমি দখল ও অন্য কিছু অভিযোগ ছিল। সরকার তার প্রতিকার করেছে। এই প্রচারের সঙ্গে সেখানকার ঘটনার সম্পর্ক নেই।’’
এই প্রচার পরিকল্পনায় সরকারের ঘোষিত বিভিন্ন ভাতার উল্লেখ করা হবে। তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা খোঁজ করবেন, কারা এই সুযোগ পেয়েছেন বা পাননি। না পেলে কেন পাননি, সেই খোঁজ নেবেন। চলতি অর্থবর্ষে রাজ্য বাজেটে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-সহ অন্যান্য যে সব ক্ষেত্রে ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে, সেগুলিকে নববর্ষে মুখ্যমন্ত্রীর উপহার বলে উল্লেখ করে প্রচারপত্র সাজানো হয়েছে। চন্দ্রিমার কথায়, ‘‘মহিলাদের আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গোড়া থেকেই সচেতন।’’
এই প্রচারে ১০০ দিনের কাজে মহিলা-সংরক্ষণের বিষয়টি আলাদা করে সামনে আনতে চাইছে মহিলা তৃণমূল। কেন্দ্রের কাছে এ বাবদ প্রাপ্য নিয়ে প্রচারপত্রে দলীয় বক্তব্যের সঙ্গেই বলা হচ্ছে, এখানেও ৩৩% মহিলা অধিকার-বঞ্চিত হয়েছেন। সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের প্রতি বঞ্চনায় সরাসরি মহিলাদের অবস্থান নিয়ে পৃথক প্রচারের কথা ভেবেছে তৃণমূল।