Lok Sabha Election 2024

কেষ্টর দেখানো পথে কি এ বারও হাঁটছে তৃণমূল

২০১৪ সালে দোলা সেনকে প্রায় ৭৯ হাজার ভোটে হারিয়ে দেল তখন সদ্য রাজনীতিতে পা রাখা বাবুল সুপ্রিয়।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৫৬
Share:

আসানসোলে গত উপনির্বাচনের সময়ে অনুব্রত। ফাইল চিত্র।

দু’বছর আগে আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিল দল। বড় ব্যবধানে দলকে জেতাতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি, ভোটের লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করা থেকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সামলানো, সব কিছুতেই পদক্ষেপ করেছিলেন অনুব্রত ওরফে কেষ্ট। শুধু তাই নয়, লোক ও অর্থবল জোগান দেওয়ার বিষয়ও সামলেছিলেন তিনি। গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি এখন রয়েছেন দিল্লির তিহাড় জেলে। তাঁর অনুপস্থিতি এ বার ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূলকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলবে, না কি তাঁর দেখানো রণনীতিতে ভরসা রেখে এ বারও শত্রুঘ্ন সিন্‌হা সংসদে যাবেন, সে প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে। জেলা তৃণমূলের যদিও দাবি, রণনীতি নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ঠিক করে দেন।

Advertisement

২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে আসানসোলে হার হয়েছিল তৃণমূলের। ২০১৪ সালে দোলা সেনকে প্রায় ৭৯ হাজার ভোটে হারিয়ে দেল তখন সদ্য রাজনীতিতে পা রাখা বাবুল সুপ্রিয়। এর পরে আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটকের মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ সেই হারের জের বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। পরে অবশ্য ফের মলয়কে মন্ত্রিসভায় ফেরান মমতা। তবে হারের পুনরাবৃত্তি হয় ২০১৯ সালের ভোটেও। আগের লোকসভা ভোটে সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়াকে হারানো মুনমুন সেনকে প্রার্থী করলেও পরাজয় এড়াতে পারেনি তৃণমূল। এ বার প্রায় ২ লক্ষ ভোটে জেতেন বাবুল।

সাংসদ পদ থেকে বাবুল পদত্যাগ করায় ২০২২ সালে ১২ এপ্রিল উপনির্বাচন হয় আসানসোলে। পরপর দু’বার হার মাথায় রেখে এ বার শত্রুঘ্ন সিন্‌হাকে প্রার্থী করার পাশাপাশি ভোট পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় বীরভূমের কেষ্টর কাঁধে। নেত্রীর বিশ্বাসের মর্যাদা রেখেছিলেন অনুব্রত। প্রচার শুরুর প্রথম থেকে শেষ দিন পর্যন্ত নানা অঞ্চলে প্রায় ২৫টি কর্মিসভা করেন তিনি। দল সূত্রের খবর, কুলটি ও আসানসোল দক্ষিণে দলের কোন্দল মেটাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন তিনি। ভোটের কাজে লোকবলও জোগান।

Advertisement

এ বার অনুব্রত ভোটের ময়দানে নেই। কেষ্ট-বিহীন ভোট বৈতরণী কী ভাবে পার করবে তৃণমূল, সে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, গত বার কর্মিসভাগুলির উপরেই বেশি ভরসা করেছিলেন অনুব্রত। কারণ বুথ স্তরের কর্মীরাই ভোটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছিলেন তিনি। কর্মীদের বক্তব্য শোনার পরে যে সব সমস্যা উঠে এসেছিল, জেলা নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে সে সবের সমাধানে নেমে পড়েছিলেন কেষ্ট। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কুলটি ও আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে দলের হারের ব্যাখা পেতে এই দুই কেন্দ্রে বেশ কিছু কর্মিসভা করেন অনুব্রত। মূলত অন্তর্দ্বন্দ্বেই যে দুই কেন্দ্রে হারের কারণ, তা বুঝে তিনি ঘন ঘন বৈঠক করে সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করেন। তার পরেও অবশ্য উপনির্বাচনে এই দুই এলাকায় পিছিয়েই ছিল দল।

এ বারও কেষ্টর দেখানো পথে কর্মিসভার উপরে ভরসা রেখে এগোচ্ছেন এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব, দাবি দল সূত্রের। জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘ভোটে জিততে দলের রণনীতি কী হবে তা একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেন।’’ অনুব্রতর অভাব বোধ হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নে নরেন্দ্রনাথের দাবি, ‘‘প্রত্যেক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিকেই দল সম্মান দেয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement