অপরূপা পোদ্দার। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা ভোটে দলের আট বিদায়ী সাংসদকে প্রার্থী করল না তৃণমূল। সেই দলে রয়েছেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। প্রার্থিতালিকা থেকে বাদ পড়ে আরামবাগবাসীর উদ্দেশে সাংসদ লিখলেন, ‘‘আমি সাংসদ থাকাকালীন যদি আমার কোনও দুর্নীতি প্রমাণ হয়, আপনারা আমাকে জুতোপেটা করবেন।’’
রবিবার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’য় নজিরবিহীন ভাবে প্রার্থিতালিকা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে র্যাম্পে হেঁটেছেন প্রার্থীরা। প্রার্থিতালিকা ঘোষণায় এমন অভিনবত্ব আগে কখনও দেখা গিয়েছে বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয় দেখা গেল, গত বার জিতেও এ বার টিকিট পেলেন না আট সাংসদ। তার মধ্যে যেমন রয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ, তেমনই রয়েছেন কাঁথি এবং তমলুকের সাংসদ যথাক্রমে শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারী, যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তীরা। তবে শিশির, দিব্যেন্দুর বাদ পড়াটা নিয়ে কোনও সংশয়ের অবকাশ ছিল না।
অর্জুন ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিয়েছেন। গত লোকসভায় বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফিরে আসা অর্জুন প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘টিকিট দেবে না আগে জানলে আসতামই না!’’ অপরূপা অবশ্য সে পথে হাঁটেননি। বরং দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতেই নিয়েছেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার প্রিয় লোকসভাবাসীর কাছে আমি নতমস্তকে ক্ষমা চাইছি, আমার দ্বারা যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে, দয়া করে আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশেও তাঁর বার্তা, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তির কোনও প্রকার অভিযোগ থাকলে দয়া করে বলবেন।’’
আরামবাগ লোকসভা থেকে ২০১৯ সালে খুবই সামান্য ব্যবধানে জয় পেয়ে সংসদে গিয়েছিলেন অপরূপা পোদ্দার। কিন্তু এ বার তিনি টিকিট পাননি। তাঁর বদলে তৃণমূল আরামবাগে প্রার্থী করেছে মিতালি বাগকে। প্রসঙ্গত, শনিবার ব্রিগেডে মঞ্চ দেখতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অন্যান্য নেতানেত্রীর পাশাপাশি মঞ্চ তৈরির কাজের তদারকি করতে দেখা গিয়েছিল অপরূপাকেও। কিন্তু রবিবার ব্রিগেডের র্যাম্পে হাঁটতে পারলেন না তিনি। কিন্তু আরামবাগবাসীর উদ্দেশে অপরূপ লিখেছেন যে, তাঁকে ডাকলেই তিনি সাড়া দেবেন। সাড়া দিয়ে নিজের গাড়িতে নয়, আরামবাগ লোকালে আসবেন।