অনন্ত মহারাজ।
আলাদা রাজ্যের দাবি না মেনে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ফোনে গোঁসা হয়েছেন এক জন। অন্য জন বিজেপিশাসিত রাজ্যে থেকে আলাদা রাজ্যের দাবিতে সরব এবং তা নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধছেন। লোকসভা ভোটের আগে, কোচবিহার থেকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজ এবং অসমে থাকা ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন’-এর প্রধান জীবন সিংহকে কার্যত একই বন্ধনীতে ফেলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোনে তাঁকে জানিয়েছেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে না কোচবিহার—সম্প্রতি এমনই দাবিতে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ান অনন্ত। নয়াদিল্লিতে যান। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আলাদা রাজ্যের অন্য ‘দাবিদার’, জীবন এক ভিডিয়ো-বার্তায় রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও সুর চড়ান। দাবি করৈন, যে কোনও ভাবে কামতাপুর তথা গ্রেটার কোচবিহার রাজ্য পুনরুদ্ধার করবেন।
‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’ (অনন্ত গোষ্ঠী) সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দেখা করতে পারেননি তাদের নেতা। এই অবস্থায় অনন্তের সঙ্গে দেখা করে তাঁর ‘মানভঞ্জন’ করতে চাইছেন কোচবিহার জেলা বিজেপির নেতারা। তাঁরা অনন্তের কোচবিহারে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। এ দিন অনন্ত ফোনে বলেন, ‘‘কিছু কাজে দিল্লিতে এসেছি। তা করছি। বাকি সমস্ত বিষয় নিয়ে পরে আলোচনা করব।’’
অন্য দিকে, জীবন সিংহ ভিডিয়ো-বার্তায় বলেছেন— ‘‘আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। আজ পর্যন্ত ভারত সরকার গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যকে পুনর্গঠিত করতে পারেনি।’’ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও তোপ দেগে জীবন বলেন, ‘‘বহিরাগত মমতাদিদি (বন্দ্যোপাধ্যায়) কামতাপুর রাজ্যের চূড়ান্ত বিরোধিতা করেছেন। চান না তা পুনর্গঠিত হোক। উনি আমাদের জাতি-মাটির শত্রু।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কামতাপুরের সমস্ত মানুষকে আবেদন জানাচ্ছি, মমতাদিদির ষড়যন্ত্রে কেউ পা দেবেন না। নিজের রক্ত বিক্রি করবেন না।’’
তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়ের টিপ্পনী, ‘‘জীবন সিংহ বিজেপির আশ্রয়ে অসমে রয়েছেন। তিনি এখন তোতাপাখি। বিজেপি যা শিখিয়ে দিচ্ছে, তাই বলছেন। আর এখন যেহেতু অনন্ত মহারাজই স্পষ্ট করেছেন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে না, মানুষের কাছে সব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘কোনও সংগঠন নিজেদের কথা বলতেই পারে। তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। অনন্ত মহারাজ জেলায় ফিরলে, আমরা তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’