বর্ধমান পূর্বের নির্দল প্রার্থী শর্মিলা সরকার ও রানাঘাটের অখিল ভারতীয় হিন্দু মহসভার প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। ফাইল ছবি।
রাত পোহালেই ভোট রানাঘাট ও বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে। দুই আসনেই জোর টক্কর তৃণমূল বনাম বিজেপির। দু’জায়গাতেই সমনামী দুই প্রার্থী লড়াইকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন। রানাঘাট লোকসভায় বিদায়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে আবারও প্রার্থী করেছে বিজেপি। সেই আসনেই প্রার্থী হয়েছেন জগন্নাথ সরকার নামে আরও এক ব্যক্তি। একই ঘটনা ঘটেছে বর্ধমান পূর্ব আসনের ক্ষেত্রেও। এখানে তৃণমূল প্রার্থীর সমনামে প্রার্থী হয়েছেন আরও একজন। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে চিকিৎসক শর্মিলা সরকারকে। সেই আসনেই নির্দল প্রার্থী হয়েছেন শর্মিলা সরকার নামে আরও এক মহিলা। তবে তিনি পেশায় চিকিৎসক নন।
দু’টি ক্ষেত্রেই একই অভিযোগ করছে, পরস্পর বিরোধী দুই রাজনৈতিক দল। রানাঘাটের ক্ষেত্রে বিজেপির অভিযোগ, ভোটারদের বিভ্রান্ত করতেই সমনামী প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। প্রথম দিকে সেই জগন্নাথ নির্দল প্রার্থী হলেও, এখন তাঁকে মান্যতা দিয়েছে এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। আপাতত রানাঘাটে সমনামী জগন্নাথ লড়াই করছেন অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার পক্ষে। তবে তাঁর প্রার্থী হওয়াকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ। তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূল যতই রানাঘাট লোকসভায় আমাদের নামে প্রার্থী দিয়ে নিজেদের রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন না কেন, রানাঘাটের মানুষ জানেন, কে তাঁদের সাংসদ, নরেন্দ্র মোদীর প্রার্থী কে আর তাঁকে কোন প্রতীকে ভোট দিতে হবে।’’
অন্য দিকে, সমনামী প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে বর্ধমান পূর্ব আসনে শাসকদলের অভিযোগের তির বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারের দিকে। তৃণমূলের অভিযোগ, বর্ধমান জেলার বাইরের মানুষ অসীম। আচমকাই তাঁকে হরিণঘাটা থেকে এনে বর্ধমানে প্রার্থী করা হয়েছে। তাই তিনি তৃণমূলের প্রার্থীর সমনামী প্রার্থী দিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছেন। কিন্তু এতে কোনও লাভই হবে না। বরং ২০১৯ সালের তুলনায় আরও অনেক বেশি ভোটে জিতবেন তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা।
তবে তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি প্রার্থী কবিয়াল অসীম। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের যে কোনও নির্বাচনে যে কোনও প্রান্তের মানুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তৃণমূলের মতো কাউকে ‘বহিরাগত’ বলা যায় না। এ ক্ষেত্রে বিজেপির বিরুদ্ধে বলার মতো কিছু না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে সমনামী প্রার্থী দাঁড় করানোর অভিযোগ আনছে তৃণমূল। পরাজয় সামনে দেখেই এমন অভিযোগ করছে তারা।’’ তবে ভোট রাজনীতির কারবারিদের কথায়, নির্বাচনে সমনামী বা ‘ডামি’ প্রার্থী দেওয়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। ভোটগণনার সময় যাতে অতিরিক্ত কাউন্টিং এজেন্ট গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে পারেন, সেই কারণেই এই ধরনের প্রার্থী দেওয়া হয়ে থাকে। আবার সমনামী প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কোনও অঙ্ক দেখতে নারাজ রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।