জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। ছবি: সংগৃহীত।
সন্দেশখালি নিয়ে সংঘাতের পথ থেকে সরছে না শাসকদল তৃণমূল। এ বার জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাল তৃণমূল। রবিবার দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন দলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
চিঠিতে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির সঙ্গে ‘যোগসাজশ’-এর অভিযোগ করেছে তৃণমূল। অভিযোগ, ভোটের সময় জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ করছেন। তাই অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখার সঙ্গে বিজেপি নেত্রী পিয়ালী দাস এই ‘ষড়যন্ত্র’-এ যুক্ত বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। সন্দেশখালিতে শাসকদলকে বদনাম করতেই স্থানীয় বিজেপি সদস্য পিয়ালি এবং বিজেপি নেতৃত্বকে নিয়ে এই কাজ করছেন রেখা, এমনটাও অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে শুক্রবার জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা একটি চিঠি দিয়ে ওই অভিযোগ জানিয়েছেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারকে। চিঠিতে রেখা লিখেছেন, সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের বাধ্য করা হচ্ছে নির্যাতনের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে। আর এই কাজ করাচ্ছেন তৃণমূলের কর্মীরাই।
তার পরেই তৃণমূল রবিবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাল নির্বাচন কমিশনে। তৃণমূলের চিঠিতে বলা হয়েছে, সন্দেশখালির মহিলাদের সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে ভুয়ো ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূলের অভিযোগ, যখন সেই সব মহিলা ভুয়ো ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চান, তখন বিজেপি নেত্রী পিয়ালি ও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের ওপর নানা ভাবে ‘চাপ’ সৃষ্টি করেছেন। যা তৃণমূলের মতে ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র’-এর শামিল। সন্দেশখালির নিরক্ষর মহিলাদের ভুয়ো ধর্ষণের অভিযোগ করতে বাধ্য করার পাশাপাশি এই ঘটনা থেকে যাতে বিজেপি ‘রাজনৈতিক ফয়দা’ তুলতে পারে, সেই কাজে ‘সাহায্য’ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন, এমনই অভিযোগ তৃণমূলের।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা তৈরি করে বিজেপি রাজনৈতিক ফসল তুলতেই এমন কৌশল নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগ, সন্দেশখালির ঘটনায় তৃণমূলকে ‘বদনাম করার ষড়যন্ত্র’ হয়েছে। তাই ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্বমূলক আইন অনুযায়ী বিজেপির এমন প্রচেষ্টা ‘অপরাধমূলক কাজ’-এর শামিল। যাঁরা ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ তুলে নিতে চাইছেন, তাঁদেরও নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে চিঠিতে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা।
জাতীয় মহিলা কমিশনের এমন প্রচেষ্টাকে ‘ষড়যন্ত্র’, ‘প্রতারণা’, ‘জালিয়াতি’ হিসাবে দেখিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে।