শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজে এসে পৌঁছলো কেন্দ্রীয় বাহিনী। ছবি: সন্দীপ পাল।
রাজ্যে পৌঁছতে শুরু করল কেন্দ্রীয় বাহিনী। জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে সুপারিশ করেছিল তাতে, শুক্রবার ১০০ এবং ৭ মার্চ আরও ৫০ কোম্পানি মিলিয়ে মোট ১৫০ কোম্পানি বাহিনী পৌঁছে যাওয়ার কথা রাজ্যে। ভোট ঘোষণা হওয়ার আগে এত সংখ্যায় বাহিনী রাজ্যে চলে আসার উদাহরণ, এর আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না প্রবীণ আধিকারিকদের অনেকেই।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে প্রতি সপ্তাহের আইনশৃঙ্খলা রিপোর্ট কমিশনকে পাঠাচ্ছেন সব জেলাশাসকেরা। এর মধ্যেই ঘটে গিয়েছে সন্দেশখালি-কাণ্ড। সরাসরি ভোটের সঙ্গে যুক্ত না হলেও, আইনশৃঙ্খলার ওই সমস্যার তথ্য কমিশন পেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই ভোট ঘোষণা, এমনকি কমিশনের ফুল বেঞ্চ আসার আগে এলাকায় এলাকায় আধা সেনার টহলকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। কমিশন সূত্রের খবর, এলাকায় পৌঁছনোর পর থেকেই মানুষের মধ্যে থেকে ভয় দূর করতে এবং আস্থা দিতে এলাকায় এলাকায় টহল দেবে বাহিনী। স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে বাহিনীর বেশি করে ঘোরার কথা। কমিশন-কর্তারা জানান, বেশি সংখ্যক মানুষকে ভোটমুখী করতে সব পদক্ষেপই করা হবে।
সব জেলাগুলির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হলেও, উত্তর ২৪ পরগনা পাচ্ছে তুলনায় বেশি বাহিনী। উল্লেখ্য, সন্দেশখালি রয়েছে সেই জেলাতেই। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত বাহিনী না পৌঁছলেও, পুলিশ সূত্রের খবর, রাতের মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে আসবে। বসিরহাট পুলিশ জেলার সন্দেশখালি, ন্যাজাট ও বসিরহাট থানার জন্য দুই কোম্পানি করে মোট ছ’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে শনিবার। বারুইপুর পুলিশ জেলার কুলতলি ও বাসন্তীতে এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা শুক্রবার রাতের মধ্যে।
কলকাতা পূর্ব ডিভিশনের কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় এক কোম্পানি বিএসএফ জওয়ান আসছে। তবে তাঁদের পৌঁছতে শনিবার রাত হয়ে যাবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর পুলিশ জেলায় দু’কোম্পানি করে বিএসএফের জওয়ানেরা ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলায় এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছয় এ দিন। রাতে দুর্গাপুর থেকে দু’কোম্পানি জেলায় ঢুকেছে।
শনিবার ভোরে তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নদিয়া জেলায় ঢুকবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আপাতত মেদিনীপুরের তিন জেলায় সব মিলিয়ে ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছবে। পূর্ব মেদিনীপুরে ময়নার বাকচা, পটাশপুরের মতো এলাকায় বাহিনী আসছে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকায় রুট মার্চ করবে বাহিনী। বীরভূমের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি জানান, জেলায় তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। তার জন্য আপাতত ছ’টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক তালিকা থেকে দু’-একটি স্কুলকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
স্কুল-কলেজের বদলে যতটা সম্ভব কর্মতীর্থ বা অন্য কোনও সরকারি ভবনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করাতে আগ্রহী রাজ্য। জেলা কর্তাদের কাছে এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে বলে খবর।