(বাঁ দিকে) চন্দ্রবাবু নায়ডু । নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
সাধারণ নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পালা চলছে। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফলে স্পষ্ট ইঙ্গিত, তৃতীয় বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ। যদিও ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের ফলের বিপরীতে এ বার বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। জোট হিসাবে ২৯০-এর কিছু বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ। আর এখানেই কলকাঠি নাড়ার জায়গায় চলে এসেছে ‘ফ্যাক্টর এন’। তিনি চন্দ্রবাবু নায়ডু।
বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, এনডিএ সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে রয়েছে ২৯৫টি আসনে। যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে বেশি। অর্থাৎ, এই আসনসংখ্যা ধরে রাখতে পারলে তৃতীয় বার মোদীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী হতে বাধা থাকার কথা নয়। কিন্তু এখানেই রয়েছে মোচড়। এখনও পর্যন্ত যা প্রবণতা, তাতে এনডিএ-র ঝুলিতে ২৯৫ আসনের মধ্যে দুই ‘এন’— যথাক্রমে নায়ডু এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দখলে যেতে চলেছে অন্তত ৩০টি আসন। এনডিএর ঝুলি থেকে সেই ৩০ আসন কমে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন মোদী। তাই রাতারাতি দর বেড়ে গিয়েছে অন্ধ্রের নায়ডুর। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া শেষ তথ্য বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশে এই মুহূর্তে মোট ২৫টি আসনের মধ্যে নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এগিয়ে রয়েছে ১৬টি আসনে। অন্য দিকে, নীতীশের জেডি (ইউ) এগিয়ে রয়েছে ১২ আসনে। দুই ‘এন’-এর দু’দল মিলিয়ে প্রায় ৩০টি আসন। দিনের শেষে এই অঙ্কেই থমকে এনডিএর জয়ের পাটিগণিত।
লোকসভার সঙ্গেই অন্ধ্রে হয়েছিল বিধানসভা ভোটও। সেই ভোটেও বাজিমাত করেছেন নায়ডু। পরিস্থিতি এমন যে, দুপুরের আগেই হার স্বীকার করে রাজ্যপালের কাছে দেখা করার সময় চেয়ে বসেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন্মোহন রেড্ডি। শোনা যাচ্ছে, তিনি ইস্তফা দিতে চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে রাতারাতিই চন্দ্রবাবু শিরোনামে চলে এলেন। এখন প্রশ্ন হল, নায়ডু কি এনডিএতেই থেকে যাবেন, না কি অতীতের মতোই শিবির বদলে আবার ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চে দেখা যাবে তাঁকে?
ফলাফলের প্রবণতা স্পষ্ট হতেই মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোন করেছিলেন নায়ডুকে। সূত্রের খবর, সেখানে বিজেপির শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে কথা হয় নায়ডুর। লোকসভা ভোটে এনডিএ-এর ভাল ফলের জন্য নায়ডু মোদীকে অভিনন্দনও জানান। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ মনে করছে, এই ফোনের মধ্যে দিয়েই হয়তো জাতীয় রাজনীতিতে আবার শুরু হল জোট-দৌত্য।