বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে প্রচারে শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় খুশি নন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে ভোটের প্রচারে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। অসন্তোষের একাধিক কারণও জানিয়েছেন স্পষ্ট করেই। শুভেন্দুর মতে, একাধিক বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের আরও কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত ছিল। যা তারা করেনি।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ফাঁসিদেওয়া ব্লকে প্রচার কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। দার্জিলিঙের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার সমর্থনে প্রচার করেন তিনি। সেই জনসভা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্বকে একহাত নেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তাঁর ভাষণে উঠে আসে রামনবমীর প্রসঙ্গ। রামনবমীতে রাজ্যের কোথাও কোথাও হিংসা ছড়ানো হতে পারে বলে বিভিন্ন জনসভা থেকে সাবধান করেছিলেন মমতা। তার পর বুধবার রামনবমীর দিন মুর্শিদাবাদে অশান্তি হয়। শুভেন্দু সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট হারাচ্ছে তৃণমূল। তাই কিছু দুষ্কৃতীকে আমদানি করে অশান্তি করাচ্ছে। পুলিশ যদি আগেই ব্যবস্থা নিত, তা হলে এমন ঘটনা ঘটত না। মমতাই একমাত্র যিনি গত সাত দিন ধরে রামনবমীর হিংসা নিয়ে চিৎকার করে চলেছেন। নির্বাচন কমিশনের সাহস থাকলে তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত।’’ রামনবমীর অশান্তির নেপথ্যে মমতার ষড়যন্ত্র আছে বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু।
আরও একটি বিষয়ে কমিশনের ভূমিকায় শুভেন্দু অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বৃহস্পতিবার। তিনি জানান, ভোট পরিচালনার দায়িত্ব শুক্রবার থেকে যথাযথ ভাবে কমিশন পালন করবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু ক্ষেত্রে কমিশনের আরও কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘শুক্রবার মানুষ ভোট দিতে বেরোবেন। কোনও বুথে যদি ক্যামেরা অচল থাকে, আশা করি কমিশন পদক্ষেপ করবে এবং সেখানে পুনরায় নির্বাচনের বন্দোবস্ত করবে। তবে কমিশন কিছু কিছু বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারত। তা তারা করেনি।’’
রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফর এবং সে ক্ষেত্রে কমিশনের ভূমিকার প্রসঙ্গও বৃহস্পতিবারের সভায় তোলেন শুভেন্দু। শুক্রবার উত্তরবঙ্গে প্রথম দফার ভোটের দিনই সেখানে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। বৃহস্পতিবার তৃণমূল তার বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দেয়। যেখানে জানানো হয়, ভোটের আগের দিন উত্তরবঙ্গে গিয়ে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করতে চলেছেন রাজ্যপাল। অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জিও জানানো হয়েছিল রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে। বিতর্কের মাঝে বৃহস্পতিবারই বিবৃতি দিয়ে সিদ্ধান্ত বদলের কথা জানান রাজ্যপাল। উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করে দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে যে ভাবে উত্তরবঙ্গে আসা থেকে আটকেছে নির্বাচন কমিশন, সেটা সমর্থনযোগ্য নয়।’’