দিনহাটার হাসপাতালে আহত তৃণমূল কর্মী। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটের আগের দিন সন্ধ্যায় উত্তপ্ত কোচবিহারের দিনহাটা। তৃণমূল কর্মীদের মারধর করার পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দুই তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে তাঁদের দেখতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। যদিও তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ স্বীকার করেনি বিজেপি। তাদের পাল্টা দাবি, দলের গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে নিজেরাই মারপিট করেছেন তৃণমূল কর্মীরা।
তৃণমূলের অভিযোগ, ভোট সংক্রান্ত কাজে দলের দুই কর্মী আজিমুদ্দিন মিঞা এবং দিলীপ বর্মণকে বুথ সভাপতির বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে যাওয়ার পথে তাঁদের উপরে হামলা হয়। বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ মোতিউর রহমান বলেন, ‘‘যে দু’জন জখম হয়েছেন, তাঁরা তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। শুক্রবার এখানে ভোট। তার আগে আমরা গালা, সিল এবং এজেন্টের ফর্ম দিয়ে ওঁদের বুথ সভাপতির বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার সময়ে কিছু বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতী আচমকা ওঁদের উপর হামলা করে। দা দিয়ে এক জনের মাথায় কোপ মেরেছে। ১৬ থেকে ১৮টি সেলাই পড়েছে তাঁর মাথায়। দা-এর আঘাতে আর এক জনের কপালের অনেকটা অংশ কেটে গিয়েছে। হাতেও চোট লেগেছে।’’
হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান উদয়ন। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সন্ধ্যা নাগাদ আমাদের দুই কর্মী রাস্তা দিয়ে বাজারের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে বিজেপির গুন্ডারা আক্রমণ করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। এক জনের মাথায় ১২টি সেলাই হয়েছে। এখন তাঁকে সিটি স্ক্যান করতে পাঠাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পরিকল্পিত ভাবে এই এলাকায় গুন্ডামি করছে বিজেপি।’’ উদয়নের দাবি, শুক্রবার ভোটের আগে তৃণমূল কর্মীদের বিব্রত করতেই বিজেপির এই চক্রান্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জখম ওই কর্মীরা ভোট দিতে বা ভোটের কাজে থাকতে পারবেন না, ওঁদের পরিবার ব্যস্ত থাকবে, এতে সুবিধা হবে বলে মনে করছে বিজেপি। এর মাঝেও সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে তাঁদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। জনগণ বিজেপিকে বার্তা দেবে।’’
এ প্রসঙ্গে দিনহাটা শহরের মণ্ডল সভাপতি তথা বিজেপির জেলা সম্পাদক অজয় রায় বলেন, ‘‘গত রাত থেকে এলাকার তৃণমূল কর্মীরা আমাদের কর্মীদের উপর অত্যাচার করে চলেছেন। এখন নিজেদের মধ্যে টাকাপয়সার ভাগাভাগি নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে এবং নিজেরাই নিজেদের মধ্যে মারপিট শুরু করেছেন। গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে ওদের কর্মীরা আহত হয়েছেন। বিজেপির সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই।’’
বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তিনি ফোন তোলেননি।