নতুন দায়িত্বে মানস ভুঁইয়া। —ফাইল চিত্র।
দুয়ারে লোকসভা ভোট। তার আগে পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের সংগঠনের নতুন দায়িত্বে মানস ভুঁইয়া! কুণাল ঘোষ, তন্ময় ঘোষের পর তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব রাজ্যের মন্ত্রী মানসের হাতে শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের সাংগঠনিক দায়িত্ব দিতে চলেছেন বলে শাসক দলের একাংশ সূত্রের খবর।
দিন কয়েক আগে কাঁথি এবং তমলুক সাংগঠনিক জেলার সমস্ত নেতৃত্বদের নিয়ে তমলুকে বিশেষ বৈঠক করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। সেখানে হাজির ছিলেন মানস ভুঁইয়া। সেখানে উল্লেখনীয় অনুপস্থিতি ছিল কুণাল ঘোষ এবং তন্ময় ঘোষের। তার পর তন্ময় ঘোষের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সেই জল্পনা আরও বেড়েছে। আগামী দশ মার্চ কলকাতার ব্রিগেডে জনগর্জন সভার ডাক দিয়েছে তৃণমূল। জেলায় জেলায় তার প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসক দল। একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের ভোট পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বক্সী। তার পর গত তিন বছর সে রকম ভাবে জেলা সফরে দেখা যায়নি তৃণমূলের রাজ্য সভাপতিকে। উল্টে নন্দীগ্রামের ভোটে মমতার পরাজয়ের পর পূর্ব মেদিনীপুরের সংগঠন দেখার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় কুণাল ঘোষকে। পরবর্তীকালে যুক্ত হন আর এক রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ। কুণাল ' অভিষেক পন্থী ' বলে তৃণমূলের অন্দরে পরিচিত। আর বক্সী বরাবর মমতার আস্থাভাজন। কাকতালীয় হলেও বক্সী যে দিন পূর্ব মেদিনীপুরে পা রাখেন সে দিনই দলের মুখপাত্র এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে ইস্তফা দেন কুণাল। পরে তন্ময়কেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জেলা তৃণমূলে শোরগোল শুরু হয়। পরে তন্ময়ের ফেসবুক পোস্টে সেই জল্পনা আরও একধাপ বেড়েছে। তিনি নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে লেখেন, 'প্রায় দু’ বছর ধরে নেত্রী ও দলের সেনাপতির নির্দেশ অনুসারে আমি কাঁথি সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি। নির্বাচনের প্রাক্কালে বিরোধীদের মদতে কিছু লোক অপপ্রচার করছে। কেউ গুজবে কান দেবেন না। আমি দলের নির্দেশের বাইরে কাজ করি না।'
তা হলে কি সত্যি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক এবং কাঁথি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব থেকে দুই ঘোষ-কে সরিয়ে দেওয়া হল? কুণাল বলেছেন,"আমি দলের মুখপাত্র নই। তাই কোনও মন্তব্য করব না।" আর তন্ময় বলছেন, "কয়েকদিন ধরে জেলা থেকে দলের নেতাকর্মীরা ফোন করে আমার কাছে জানতে চাইছিলেন। যেহেতু বক্সীদা রাজ্য সভাপতি হিসেবে তমলুকের সভা করতে আসছেন তাই আমার আসার প্রয়োজন ছিল না। তা সত্ত্বেও বিরোধীরা প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন, আমাকে নাকি পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য দলের নেতা ও কর্মীদের আশ্বস্ত করতে ফেসবুকে পোস্ট করতে বাধ্য হয়েছি।"
প্রসঙ্গত, গত বছর এগরার খাদিকুল বিস্ফোরণ কাণ্ডের পরে জেলায় একাধিক বার এসেছিলেন মানস ভুঁইয়া। তার পর লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে পূর্ব মেদিনীপুরে তিনি সক্রিয় হওয়ার পর মানসের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তি নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও মানস নিজে বলছেন,"কোনও দায়িত্ব নয়। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুকটাক কাজের নির্দেশ দেন। তাই পূর্ব মেদিনীপুরে আসি।"