হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। —ফাইল চিত্র।
এ যেন এক আমলাকে সম্ভাব্য প্রার্থী ধরে নিয়ে আর এক আমলাকে সামনে রেখে লড়াইয়ের প্রস্তুতি! বলা হচ্ছে, এ বার দার্জিলিং কেন্দ্রে এক ভূমিপুত্র বনাম আরেক ভূমিপুত্রের লড়াই হতে পারে। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে দেশের প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে বিজেপি প্রার্থী করতে পারে বলে চাউর হয়েছে। সেখানে বিরোধী তৃণমূল শিবিরেও আরেক আমলার নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তিনি রাজ্য সরকারের প্রাক্তন আমলা গোপাল লামা। গত লোকসভায় দার্জিলিং লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী অমর সিংহ রাইয়ের সমসাময়িক গোপাল অবশ্য এ ব্যাপারে এখনই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে তৃণমূল সূত্রের দাবি, শ্রিংলা নিজেকে ‘ভূমিপুত্র’ বলে প্রচারে থাকায় আর এক ভূমিপুত্র গোপাল লামাকে ময়দানে নামাতে প্রস্তুত ঘাসফুল শিবির। যদিও তৃণমূল বা বিজেপি জেলা নেতৃত্ব এখনই প্রার্থী নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এক সুরে তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য নেতৃত্বই লোকসভার প্রার্থী ঠিক করবেন। সব চূড়ান্ত হয়ে নাম ঘোষণার পরে, আমলা বনাম আমলা টক্কর হচ্ছে কি না, স্পষ্ট হয়ে যাবে।
গত বছর জি২০ সামিটের পর থেকে হর্ষবর্ধন শ্রিংলার আনাগোনা দার্জিলিং জেলায় বেড়ে যায়। তিনি শীর্ষ সম্মলনের চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসাবে কাজ করছিলেন। বেশ কয়েক দফায় বিজেপি প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা সফরেও আসেন। কয়েক মাস আগে, নতুন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সামনে রেখে তিনি জেলার পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নামেন। গত সপ্তাহেও তিনি কালিম্পং গিয়ে নাগরিক সভার মতো বৈঠক করেছেন। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরে দুই শিবিরের ‘ফাটল’ দেখা গিয়েছে।
বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তার নেতৃত্বে একাধিক বিধায়ক, নেতৃত্ব শ্রিংলার বিরোধিতায় সরবও হন। আবার দলের একাংশ শ্রিংলাকে প্রার্থী ভেবেই রাস্তায় কাজে নামেন। তৃণমূলের দাবি, শ্রিংলা নিজেকে ভূমিপুত্র, আমলা বলে মাঠে রয়েছেন। সেখানে স্থানীয় ভাবে তৃণমূলের তরফে যাঁকে ভাবা হচ্ছে, তিনিও জীবনের বড় অংশ দার্জিলিং জেলায় কাটিয়েছেন। মহকুমাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, জিটিএ-র ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) বা পর্যটন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর পদের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদেও কাজও করেছেন। তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, শ্রিংলার থেকে জেলার খুঁটিনাটি থেকে বিভিন্ন এলাকা গোপাল লামা বেশি চেনেন এবং জানেন।
বিজেপি নেতাদের মত, লোকসভার ভোট জাতীয় রাজনীতির ভোট। দিল্লির রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক মহলের অন্দরে মহলে শ্রিংলার পরিচিতি নিয়ে প্রশ্ন নেই। দেশের বিদেশ সচিব হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায়, তিনি প্রতিটি মন্ত্রক থেকে দফতরের আগা-পাশ-তলা চেনেন। অফিসার থেকে নেতারা পরিচিত। এই অবস্থায় বিজেপির আমলার বিরুদ্ধে তৃণমূলের আমলাও যে তৈরি থাকতে পারেন, তা রাজ্যের শাসক দলের প্রস্তুতি দেখে বোঝা যাচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।