বাঁ দিক থেকে, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা এবং অখিলেশ। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে অভিন্ন ‘শত্রু’ বিজেপিকে হারাতে শেষ পর্যন্ত হাত মেলাল কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। গত কয়েক দিনের টানটান উত্তেজনার পর বুধবার বিকেলে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করেছেন দু’দলের নেতারা।
রফা-সূত্র অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৭টিতে লড়বে কংগ্রেস। অন্য দিকে, পাশের রাজ্য মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের সমর্থনে অখিলেশের দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের তরফে দলের রাজ্য সভাপতি অজয় রাই এবং এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ পাণ্ডে হাজির ছিলেন। এসপির তরফে ছিলেন, দলের উত্তরপ্রদেশ শাখার প্রধান নরেশ উত্তম পটেল এবং জাতীয় সাধারণ সম্পাদর রাজেন্দ্র চৌধুরী।
নরেশ বুধবার বলেন, ‘‘কংগ্রেস রায়বরেলী, অমেঠী, গাজ়িয়াবাদ, কানপুর এবং আরও ১২টি আসনে লড়বে।’’ অবিনাশ জানিয়েছেন, এসপি তাদের কোটার ৬৩টি আসনের মধ্যে কয়েকটি অন্য সহযোগীদের ছাড়তে পারে। এসপি প্রধান অখিলেশ বুধবার সকালে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তাঁর কোনও মতবিরোধ নেই এবং লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে দুই দল সমঝোতা করে লড়বে। তার পরেই জোটের চূড়ান্ত ঘোষণা হল।
‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়ব’, এই কথাটি অখিলেশ অতি সহজে ঘোষণা করলেও কাজটা মোটেই সহজে হয়নি। বরং গত তিন সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক টানাপড়েনের জেরে উত্তরপ্রদেশে ‘ইন্ডিয়া’র ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। গত বছরই অখিলেশ জানিয়েছিলেন, উত্তরপ্রদেশে লোকসভা নির্বাচনে জোট বেঁধেই লড়বে ‘ইন্ডিয়া’। কিন্তু বাদ সাধছিল আসন সংখ্যা।
এসপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, কংগ্রেসের তরফে সে রাজ্যের ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্য ২৮টি দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে অখিলেশ তার অর্ধেকও দিতে রাজি ছিলেন না। দফায় দফায় আলোচনার পরে গত শনিবার ১৭টি আসন ছাড়ার ‘শেষ প্রস্তাব’ কংগ্রেসকে দিয়েছিলেন এসপি নেতৃত্ব। কিন্তু রাহুল অনুগত নেতারা ২০টির কমে রাজি হতে চাননি। মোরাদাবাদ এবং বালিয়া আসনের দাবিও ছাড়তে চাননি তাঁরা।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, টানাপড়েনের এই আবহে মঙ্গলবার রাতে প্রিয়ঙ্কা ফোন করেন অখিলেশকে। জানান, মোরাদাবাদ এবং বালিয়ার বদলে হাথরস, শ্রাবস্তী এবং বারাণসীর মধ্যে যে কোনও একটি আসন ছাড়লে কংগ্রেস রাজি। এর পরেই ‘বরফ গলে’। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের সময় প্রিয়ঙ্কার হস্তক্ষেপেই আসন রফা নিয়ে কংগ্রেস-এসপির ‘জট’ কেটেছিল। সে সময়ও যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে জোটের ঘোষণা করেছিলেন দু’দলের নেতারা।