ঝাঁসির সভায় অখিলেশ (বাঁ দিকে) এবং রাহুল (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে হাতেগোনা কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠীকে নিয়ম ভেঙে বহু সুবিধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে যৌথ সভায় তাঁর দাবি, মোদী-ঘনিষ্ঠ ২২ জন শিল্পপতি নিয়ম-বহির্ভূত সুযোগ পেয়েছেন।
ঝাঁসির সভায় রাহুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের ১৬ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছেন, যা গত ২৪ বছর ধরে ‘মনরেগা’ (১০০ দিনের কাজের প্রকল্প)-য় বরাদ্দ করা অঙ্কের সমান।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তা হলে দেশের সংবিধানকে ছিঁড়ে ফেলবে, যা দেশের গরিব মানুষের রক্ষাকবচ।’’
আগামী ২০ মে পঞ্চম দফায় উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি এবং হামিরপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। ‘ইন্ডিয়া’র শরিক কংগ্রেস ঝাঁসিতে এবং এসপি হামিরপুরে লড়ছে। ওই দুই কেন্দ্রের যৌথ প্রচারে রাহুল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় এলে কৃষক, গরিব এবং যুবস্বার্থে কাজ করবে। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা প্রতিটি পরিবারকে বার্ষিক এক লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য করা হবে। অগ্নিবীর প্রকল্প বাতিল, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় বেকারদের শিক্ষানবিশ কর্মসূচি এবং পরবর্তী সময়ে স্থায়ী নিয়োগ, কৃষকদের ফসলের ন্যায্যমূল্য এবং ব্যবসায়ীদের জন্য পাঁচ স্তরের পরিবর্তে একটি স্তরে জিএসটি চালুর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
গত ৮ মে তেলঙ্গানার ওয়ারঙ্গলে লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রচারে গিয়ে মোদী প্রশ্ন তুলেছিলেন, পাঁচ বছর ধরে গলা ফাটিয়ে এখন আদানি-অম্বানী নিয়ে রাহুলেরা রাতারাতি চুপ করে গেলেন কেন? এর পরেই মোদীর প্রশ্ন, ‘‘ভোটঘোষণার পর তিনিও (রাহুল) কি এই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ‘টেম্পো বোঝাই’ টাকা নিয়েছেন?’’
মোদীর ওই মন্তব্যের পরেই এক্স হ্যান্ডলে ভিডিয়ো-বার্তায় রাহুল বলেন, ‘‘নমস্কার মোদিজি। কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছেন নাকি? সাধারণত আপনি বন্ধ ঘরে আদানিজি-অম্বানীজির কথা বলেন। এই প্রথম প্রকাশ্যে আদানি, অম্বানী বললেন। আর ওঁরা যে টেম্পো বোঝাই করে টাকা দেন, সেটাও আপনি জানেন? ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা রয়েছে নাকি? এক কাজ করুন। সিবিআই-ইডিকে ওঁদের কাছে পাঠান। ঘাবড়ে না গিয়ে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করান।’’
সেই ভিডিয়ো-বক্তৃতার পুনরাবৃত্তি করে মঙ্গলবার রাহুল আবার বলেন, ঘোষণা, ‘‘নরেন্দ্র মোদী তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। আমরা গরিব ভারতবাসীকে অর্থসাহায্য দেব। উনি (মোদী) ২২ জন ধনকুবের বানিয়েছেন। আমরা কয়েক কোটি লক্ষপতি বানাব।’’ অখিলেশ তাঁর বক্তৃতায় দাবি করেন, ‘‘লোকসভা ভোটে এ বার উত্তরপ্রদেশে ধরাশায়ী হবে বিজেপি।’’