প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধীর শিবিরের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসে যোগ দেননি তিনি। বিহারে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে নয়া দল ‘জন সুরাজ পার্টি’ গড়লেও লোকসভা ভোটে সক্রিয় ভাবে অংশ নেননি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। যদিও ধারাবাহিক ভাবে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য ফল নিয়ে নানা পূর্বাভাস দিয়ে চলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার এনডিটিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিকে বলেন, ‘‘বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ এ বারের লোকসভা ভোটেও ‘ক্লিন সুইপ’ করবে (নিরঙ্কুশ জয় পাবে)। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ৩০৩টি আসনে জিতেছিল। এ বারও তাদের প্রাপ্ত আসন তার আশপাশেই থাকবে। এমনকি, ৩০৩ ছাড়িয়েও যেতে পারে।’’ এমন পূর্বাভাসের কারণ কী? পিকের জবাব, ‘‘মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে, এমন কথা দেশের কোনও প্রান্ত থেকেই শুনিনি।’’
পিকের যুক্তি, সাধারণ ভাবে সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে জনগণের প্রচণ্ড ক্ষোভ, হতাশা, অপূর্ণ আকাঙক্ষার বহিঃপ্রকাশ না থাকলে ভোটের ফল শাসকের অনুকূলেই যায়। সম্প্রতি, সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পিকে দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের এক নম্বর দল হয়ে উঠতে পারে। বিজেপি কয়েক বছরে দক্ষিণ এবং পূর্ব ভারতে তাদের উপস্থিতি প্রসারিত করার জন্য যে কঠোর পরিশ্রম করেছে, তার ফলেই এমনটা হতে পারে বলেই তিনি দাবি করেন।
২০২১-এর নীলবাড়ির লড়াইয়ের আগে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে বাংলায় নিয়ে আসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পারিশ্রমিক নিয়ে তৃণমূলের ভিত মজবুত করার গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন তিনি। অভিষেক-পিকে জুটিই ছিল ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের অন্যতম চালিকাশক্তি। ২০২১ সালে তৃণমূলের হয়ে ভোটের কৌশল রচনা করার সময় পিকের মন্তব্য ছিল, ভোটবাক্সে বিজেপি তিন অঙ্কের সংখ্যা পেরোলে ভোটকুশলীর পেশা ছেড়ে দেবেন তিনি। তা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব বিদ্রুপ করতেও ছাড়েননি তাঁকে। কিন্তু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, প্রশান্তের কথাই অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছে।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরই পরামর্শদাতার ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন পিকে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘আইপ্যাকে’র সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। তবে তাঁর তৈরি সংস্থা ‘আইপ্যাক’ তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে রয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ এবং সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে লোকসভা ভোটের সম্ভাব্য ফল নিয়ে পিকের মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।