গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের চাবি হারানোর ঘটনাকেও এ বার ভোটপ্রচারের হাতিয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ওড়িশায় নির্বাচনী সভার আগে জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই অঙ্গুলের জনসভায় কয়েক বছরের পুরনো ওই ‘চাবি রহস্যে’র অবতারণা করেন তিনি।
মোদী সোমবার বলেন, ‘‘দ্বাদশ শতকে তৈরি এই প্রাচীন মন্দির বিজেডির শাসনে নিরাপদ নয়। গত ছ’বছর ধরে জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের চাবির খোঁজ নেই।’’ আগামী শনিবার ষষ্ঠ দফায় পুরী, কটক, ভুবনেশ্বর-সহ ওড়িশার একাংশে ভোট। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৮ সালে ওড়িশা হাই কোর্টের নির্দেশে দরজা খুলেছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কিংবদন্তিমুখর রত্নভান্ডারের। সে বার রত্নভান্ডারের তিনটি চাবির একটির ‘অন্তর্ধান’ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। হাই কোর্টের নির্দেশে সে বছর রথযাত্রার সময়ে ভান্ডারের কিছু সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই)। কিন্তু তৃতীয় চাবিটির খোঁজ মেলেনি। খোলা হয়নি রত্নভান্ডারের অন্দরের প্রকোষ্ঠও। কারণ, পুরীর গজপতি রাজা, মন্দিরের সরকারি প্রশাসকের অফিস আর ভান্ডারের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর জিম্মাদার ভান্ডার মেকাপের কাছে রাখা তিন জোড়া চাবি একত্র হলে তবেই খোলা যায় ‘ভিতর ভান্ডার’।
পুরীর মন্দিরের দেবতা জগন্নাথের মাথার ব্রহ্মজ্যোতি হিরে, বলরামের মাথার নীলা বা সুভদ্রার মাথার মানিক রত্নভান্ডারের বাহির-ভান্ডারে রাখা থাকে। অন্দরের ভান্ডারে কী রয়েছে তা নিয়ে জল্পনা দীর্ঘ দিনের। শেষ বার ভান্ডারের সম্পদের খতিয়ান নেওয়া হয়েছিল ১৯৭৮-এ! তার পরে ’৮৪ সালে জগন্নাথের স্বর্ণচিতার মেরামতির দরকারে কিছু সোনার খোঁজে ভিতর-ভান্ডার খোলা হয়। সেই শেষ! তার পরে দশকের পর দশক অন্ধকার কুঠুরিতে জমেছে রহস্য। লোকসভা ভোটের মুখে সেই রহস্য উস্কে দিলেন মোদী।