চিন্তিত ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবজ্যোতি ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
‘‘সিবিআই থেকে বলছি। আপনার মেয়েকে হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। ৪০ লক্ষ টাকা দিলে ‘সেটেলমেন্ট’ হবে।’’ এমনই ফোন পেয়ে কী করবেন ভেবেই উঠতে পারেননি ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে স্বামীকে খবর দেন তিনি। অন্য দিকে, মেয়েকে বার বার ফোন করেছেন বাবা-মা। কিন্তু বার বার ফোন বেজে গেলেও তিনি তোলেননি। পড়িমরি করে মেয়ে যে কলেজে পড়েন সেখানে যান ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবজ্যোতি ঘোষ। দেখলেন, মেয়ে ক্লাস করছেন। তবে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কাছে এমন উড়ো ফোন নিয়ে চাঞ্চল্য এলাকায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে।
ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জানান, তাঁর স্ত্রী একটি ফোন পান মঙ্গলবার। জানানো হয়, সিবিআই থেকে ফোন করা হয়েছে। তাঁদের মেয়ে সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন। তবে তাড়াতাড়ি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে দিলে ‘সেটেলমেন্ট’ হয়ে যাবে। স্ত্রীর কাছে এই খবর পেয়েই বুঝেছিলেন উড়ো ফোন। কিন্তু মেয়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেন। তখন মেয়ে বাড়ির বাইরেও ছিলেন। বহু বার তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন ভাটপাড়া পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবজ্যোতি ও তাঁর। কিন্তু ফোন বেজে গেলেও মেয়ে ফোন তোলেননি। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দেবজ্যোতি। তিনি সোজা চলে যান জগদ্দল থানায়। সেখানে অভিযোগ জানানোর পর মেয়ের কলেজে ছুটে যান। তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন মেয়ে কলেজেই রয়েছেন। ক্লাস চলছিল, তাই ফোন ধরতে পারেননি। স্বস্তির শ্বাস ফেলেন ভাইস চেয়ারম্যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ফোনটি কে করেছিলেন, তা জানা যায়নি। তবে ফোনটি পাকিস্তান থেকে এসেছিল বলে জানা যাচ্ছে।
অন্য দিকে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেবজ্যোতির বাড়িতে ছুটে আসেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক এবং জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ পরিকল্পিত ভাবে বাইরের ফোন নম্বর দিয়ে ফোন করিয়ে তাঁদের নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে পার্থদের কটাক্ষ করেছেন বিদায়ী সাংসদ অর্জুন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন তো ওঁদের হাতে। থানায় অভিযোগ জানালে অবশ্যই সত্যিটা বেরিয়ে আসবে।’’