উলুবেড়িয়া থানা ঘেরাও বিজেপির। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালির ১১ জন মহিলা এবং দু’জন পুরুষকে আটক করা ঘিরে উত্তপ্ত হাওড়ার উলুবে়ড়িয়া। কেন আটক করা হল সন্দেশখালির বাসিন্দাদের, এই প্রশ্ন তুলে উলুবেড়িয়া থানা ঘেরাও বিজেপির। তার আগেই অবশ্য সকলকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
সন্দেশখালিতে তৃণমূলের অত্যাচারের বিবরণ তুলে ধরতে সেখানকার কয়েক জন মহিলাকে দিয়ে গোটা রাজ্যে ঘুরে ঘুরে প্রচার করাচ্ছে বিজেপি। এই দলটি আগে বালুরঘাট লোকসভায় গিয়ে বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের হয়ে প্রচার করেছে। বীরভূমেও বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহার সমর্থনে সেখানকার মানুষকে তৃণমূলের কাণ্ড শুনিয়েছেন এই মহিলারাই। এ বার তাঁদের গন্তব্য ছিল হাওড়ার উলুবেড়িয়া। কিন্তু সেখানেই সমস্যা। সূত্রের খবর, সোমবার উলুবেড়িয়ার যদুবেড়িয়ার একটি বিয়েবাড়ি ভাড়া দেওয়ার হলে থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল সন্দেশখালি থেকে আসা ১১জন মহিলা এবং দু’জন পুরুষের। কথা ছিল, উলুবেড়িয়ার বিজেপি প্রার্থীর হয়ে তাঁরা প্রচার করবেন। কিন্তু জানা গিয়েছে, ওই হলের মালিকই থানায় খবর দেন। অভিযোগ, পুলিশ সন্দেশখালির বাসিন্দাদের থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জানায়, গোলমালের আশঙ্কায় সন্দেশখালির মহিলা, পুরুষদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এক আইনজীবীর উপস্থিতিতে পুলিশ সন্দেশখালির ১১ মহিলা এবং দুই পুরুষকে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেয়। তার পর তাঁরা থানা থেকে বেরিয়ে যান। এর পর এলাকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা উলুবেড়িয়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ চলে। তার পর বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা থানা ছেড়ে চলে যান।
মহিলা মোর্চার রাজ্য ফাল্গুনী পাত্র বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মা, বোনেরা এখানে তাঁদের উপর হওয়া অত্যাচারের কথা শোনাতে এসেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। তাঁদের জোর করে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ, কোথায় নিয়ে গিয়েছিল, আমরা কিছুই জানি না। আইনের দ্বারস্থ হব।’’
এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া থানা গর্হিত অপরাধ করেছে। সন্দেশখালির মহিলারা যাঁরা বিজেপির হয়ে ওখানে প্রচার করছে, তাঁদের পুলিশ আটক করেছে। প্রধানমন্ত্রী যাঁদের শক্তিস্বরূপা বলেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে এই ব্যবহার পুলিশের! ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে তাঁদের চলে যেতে বলতেই পারে পুলিশ, কিন্তু ভোট এখনও বহু দিন বাকি। আইসি গর্হিত অপরাধ করেছেন। উলুবেড়িয়া থানার আইসির উপর আমরা পুরো নজর রাখছি।’’
হাওড়া গ্রামীণ তৃণমূলের সহ-সভাপতি অভয় দাস বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মহিলারা সন্দেশখালিতেই প্রচার করতে পারেন। এখানে আসার কী দরকার? এখানে তাঁদের মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। আর সন্দেশখালিতে বিজেপি টাকা খাইয়ে কী কী করেছে, স্টিং ভিডিয়োয় তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তাই এ সব নাটক আর মানুষ নিতে পারছেন না। তবে, পুলিশ তাঁদের আটক করেছে কি না সে ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। পুলিশ পুলিশের কাজ করুক, এটাই কাম্য।’’