গুসকরায় এই দেওয়াল লিখন নিয়ে বিতর্ক। পরে তা মুছলেন তৃণমূল কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতাটি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে আগেও। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকা’ নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে লেখা কবিতাটি তৃণমূল প্রচারেও ব্যবহার করে এক সময়। সমালোচনা হয়, অর্থ না বুঝেই দেওয়াল লিখনে কবিতা ব্যবহার করছে তৃণমূল। এ বারও অনুব্রত এলাকাতেই দেওয়াল লিখনে দেখা গেল সেই কবিতা। পরে অবশ্য তা মুছে দেয় তৃণমূল। নেতাদের দাবি, দেওয়াল শিল্পীরা ভুল করে লিখে ফেলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরা শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের উদ্যোগে গুসকরা-মানকর রাস্তার ধারাপাড়ায় একটি হিমঘরের পাঁচিলে বোলপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে এই দেওয়াল লিখন করা হয়। তাতে লেখা হয়েছিল, ‘দেখ খুলে তোরা তিন নয়ন,/ রাস্তাজুড়ে খড়্গ হাতে/ দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’।
সিপিএমের গুসকরা পশ্চিম এরিয়া কমিটির সদস্য অতনু ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘যে কবিতা তৃণমূলের সমালোচনা করে কবি লিখেছিলেন এবং এর জন্য তাঁকে কুকথা শুনতে হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের কাছে, সেই কবিতা লিখেই প্রচার করছে তৃণমূল। এটা অজ্ঞতা নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে সন্ত্রাসের জন্য, তা জানি না।’’ যদিও তৃণমূলের গুসকরা শহর সভাপতি দেবব্রত শ্যাম বলেন, ‘‘কিছু অতি উৎসাহী কর্মী না বুঝেই ওই কবিতা লিখেছিলেন। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ওয়ার্ডের কর্মীরা তা মুছে দেন।’’
দেবেশ রায়ের ‘সেতুবন্ধন’ পত্রিকায় কবিতাটি লিখেছিলেন শঙ্খ ঘোষ। তার কিছুদিন আগে অনুব্রত মণ্ডল মন্তব্য করেছিলেন, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকবে। যা দেখে বিরোধীরা ফিরে যাবে। আর কবি লেখেন, ‘‘যথার্থ এ বীরভূমি/ উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে/ পেয়েছি শেষ তীরভূমি।/ দেখ খুলে তোর তিন নয়ন/ রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে/ দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’’। এর পরেই অনুব্রতর শঙ্ঘ ঘোষকে কটাক্ষ করা নিয়ে সরগরম হয় সাহিত্যিক মহল। লোকসভা ভোটের আগে দেওয়াল লেখার ‘ভুলে’ ফের চর্চায় এলেন অনুব্রতও।
বুধবার ওই দেওয়ালে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ছবি এঁকে প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করা হয়।
গুসকরা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, তৃণমূলের মাধব সাহার দাবি, ‘‘ এ সব কিছু না। লেখক দিয়ে দেওয়াল লেখানো হয়েছিল। তাই এই ভুল। তা সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে।’’