প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
যেদিন রাজধানীর রামলীলা ময়দানে ইন্ডিয়া মঞ্চের বিরোধী নেতারা একত্রিত হলেন, সেদিনই উত্তরপ্রদেশের মিরাট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মিরাটের জনসভাকে এ দিন তিনি কার্যত রামলীলার জবাবি ভাষণের মঞ্চে পরিণত করলেন। বললেন, এ বারের লোকসভা নির্বাচন ‘দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে দুনীর্তির শত্রুদের লড়াই’। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি লড়ছেন বলেই অনেক নেতা জেলে গিয়েছেন। মোদীর কটাক্ষ, ‘‘ওঁরা সু্প্রিম কোর্টে গিয়েও জামিন পাচ্ছেন না। তাই দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। ইন্ডিয়া ব্লকের ছাতার তলায় সেই কারণেই একজোট হয়েছেন।’’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এ ভাবে মোদীকে থামানো যাবে না। প্রতিটি দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’
ইন্ডিয়া নেতৃত্বকে আক্রমণ করে মোদী রবিবার আরও বলেছেন যে, ‘‘আমি বলি দুর্নীতি নির্মূল করো আর ওরা বলে দুর্নীতিবাজদের বাঁচাও। ওরা মনে করে, মোদী ভয় পেয়ে যাবে। কিন্তু আমার জন্য মেরা ভারত মেরা পরিবার হ্যায়। আমি আমার দেশকে দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে বাঁচাতেই প্রতিটি পদক্ষেপ করছি। যে যত বড় দুর্নীতিবাজ হোক না কেন, অ্যাকশন হবেই। যারা দেশকে লুট করেছে, তাদের সেটা দেশকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এটাই মোদীর গ্যারান্টি।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে আজ মিরাটের মেগা সমাবেশ দিয়েই মোদী তাঁর প্রচার শুরু করলেন। বললেন, ‘‘মিরাটের এই জমির সঙ্গে আমার একটা বিশেষ বন্ধন আছে। ২০১৪ এবং ২০১৯... আমি এখান থেকেই আমার নির্বাচনী প্রচার শুরু করি। এখন ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রথম জনসভাও মিরাটে হচ্ছে। ২০২৪ সালের নির্বাচন শুধু সরকার গঠনের জন্য নয়। ২০২৪ সালের নির্বাচন বিকশিত ভারত গড়ার নির্বাচন।’’ তিনি ‘৪ জুন, ৪০০ পার’ স্লোগান দিয়ে এই নির্বাচনে ৪০০ আসন ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য দেশবাসীর সমর্থন আহ্বান করেন। মোদীর দাবি, “২০২৪ সালের রায় ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করবে। ভারত যখন ৫ম স্থানে পৌঁছেছে, তখন ২৫ কোটি নাগরিক দারিদ্র থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ভারত যখন তৃতীয় স্থানে পৌঁছবে, তখন দেশ থেকে দারিদ্র দূর হবে।”
আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি রোডম্যাপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, “আমাদের সরকার ইতিমধ্যে তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই ১০ বছরে আপনারা উন্নয়নের ট্রেলার দেখেছেন। এখন দেশকে আরও অনেক এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” মোদী দাবি করেছেন, গত এক দশকে অনেকগুলি কাজ করা গিয়েছে, যেগুলো এক সময় অসম্ভব বলে মনে করা হত। তারই উদাহরণ হিসেবে তিনি অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল এবং অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কথা তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গত এক দশকে নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রগতির উপরেও জোর দেন। মোদীর সঙ্গে আজ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যোগী আদিত্যনাথ এবং আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধরি। এক দশক পরে এই প্রথম জয়ন্ত মোদীর সঙ্গে একমঞ্চে এলেন। ফেব্রুয়ারিতে জয়ন্তর পিতামহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরি চরণ সিংহকে ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণার পরে জয়ন্ত এনডিএ-তে যোগ দেন।