PM Narendra Modi

বাংলায় ইডির হাতে উদ্ধার হওয়া টাকা নিয়ে বড় বার্তা মোদীর, ‘রানিমা’ অমৃতাকে বলা ফোন-কথা সমাবেশে

নির্বাচনী সভা থেকে এই প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে শোনা গেল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি অভিযোগের কথা। পাশাপাশি, মোদীর মুখে শোনা গেল ‘নতুন’ গ্যারান্টির কথা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:১০
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।

কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে যে কথা প্রচার করতে বলেছিলেন তিনি, রবিবার বাংলা সফরে এসে সেই ঘোষণা নিজেই করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানালেন, বিভিন্ন ‘দুর্নীতি’ মামলায় মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই অর্থ বঞ্চিতদের ফিরিয়ে দেবেন। শুধু তাই নয়, নির্বাচনী সভা থেকে এই প্রথম বার প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি অভিযোগের কথা। পাশাপাশি, বাংলায় ভোট প্রচারে এসে মোদীর মুখে শোনা গেল ‘নতুন’ গ্যারান্টির কথা।

Advertisement

রবিবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে তৃণমূলকে একের পর এক ইস্যুতে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর হামলা, মোদীর গলায় শোনা গিয়েছে একের পর এক অভিযোগ। তিনি বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এক একটি বুথে এ বার তৃণমূলের জামানত জব্দ হওয়া দরকার। আসলে তৃণমূল চায়, ওদের তোলাবাজরা, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা যেন কুকাজ করার খোলা লাইসেন্স পান। এই জন্য যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তের জন্য যায়, তাদের উপর তৃণমূল হামলা করে। অন্যদের দিয়ে হামলা করায়। তৃণমূল আইন এবং সংবিধানকে তছনছ করার দল।’’ সন্দেশখালি থেকে বিভিন্ন ঘটনার তুলনা টেনে মোদী রাজ্যের শাসকদলকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘এখানে একের পর এক ঘটনায় আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।’’ এর পরই কৃষ্ণনগরের রানিমা অমৃতাকে ফোনে দেওয়া ‘পরামর্শ’ খোলা সভায় ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আজ বাংলার মাটি থেকে গ্যারান্টি দিয়ে যাচ্ছি, যাঁরা দুর্নীতি করে অর্থ জমা করেছেন, ইডি তাঁদের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি এবং অন্যান্য জিনিস বাজেয়াপ্ত করে রেখেছে। আমি পরামর্শ নিচ্ছি যে, শিক্ষক নিয়োগের জন্য গরিব মানুষদের যত টাকা গিয়েছে, সরকারি চাকরি পেতে যত গরিবের টাকা গিয়েছে এবং যেখানে পুরোপুরি প্রমাণ পাওয়া যাবে যে, হ্যাঁ, এখান থেকেই টাকা গিয়েছে, ওই সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আমি তাঁদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’’

বাংলায় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে। কয়েক বছরের পুরনো ওই সব মামলায় শাসকদলের একাধিক নেতা এবং ঘনিষ্ঠেরা গ্রেফতার হয়েছেন। ওই প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বেচারা শিক্ষকদের চাকরির জন্যও টাকা নিয়েছে। আমি ওঁদের টাকা ফেরত দেব।’’ এর পর তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেসকে এক পঙ্‌ক্তিতে ফেলে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই তিন রাজনৈতিক দলের নেতারা দুর্নীতি থেকে একে অন্যকে বাঁচাতে ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি করেছেন। আমি বলছি দুর্নীতি সরাও। ওরা বলে দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাও! আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, ৪ জুনের পর দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত আরও জোরদার হবে।

Advertisement

এর আগে গত ২৬ মার্চ কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতাকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলায় ইডি যে অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে, সেটা যাতে গরিবদের কাছে যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ করছেন। এ জন্য আইনি বিকল্প কী কী রয়েছে, তা দেখছেন। বিজেপি প্রার্থীকে ফোনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক দিকে বিজেপি দেশে দুর্নীতিকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্য দিকে, সমস্ত দুর্নীতিবাজ একে অপরকে বাঁচাতে এক হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রী ‘আস্থা’ প্রকাশ করে বিজেপি প্রার্থীকে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবে।’’

মোদীর ওই ঘোষণার পর কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে একটি হিসাব তুলে ধরেন। তিনি জানান, মোদী যদি ইডি দ্বারা বাজেয়াপ্ত করা সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা সাধারণ মানুষকে ফেরত দেন, দেশের সব নাগরিক মাথাপিছু ২১ টাকা করে পাবেন। কেন সারদার টাকা এখনও কেউ ফেরত পেলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement