Lok Sabha Election 2024 Phase Seven

ভোটের সুর সপ্তমে উঠবে শনিবার! বাংলার ন’টি আসনে নজরে অভিষেক, সুদীপ, তাপস, রেখারা

শুরু হয়েছিল এপ্রিলের ১৯ তারিখে। একের পর এক দফা পেরিয়ে শেষ দফার ভোটগ্রহণ শনিবার। আর এই সপ্তম দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ভোট হবে শেষ ন’টি আসনে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ২৩:০৬
Share:

(বাঁ দিক থেকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায় এবং রেখা পাত্র। —ফাইল চিত্র ।

শুরু হয়েছিল এপ্রিলের ১৯ তারিখে। একের পর এক দফা পেরিয়ে শেষ দফার ভোটগ্রহণ শনিবার। শনিবার সপ্তম দফার ভোট দেশ জুড়ে। আর এই সপ্তম দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ভোট হবে শেষ ন’টি আসনে। দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে হবে ভোটগ্রহণ। এই নয় আসনে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী কারা? কত জন ভোটার? কমিশনের প্রস্তুতিই বা কেমন? তার ঝলক রইল আনন্দবাজার অনলাইনে।

Advertisement

শনিবার গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে পর পর দু’বার জিতে ওই কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছেন তিনি। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে অভিজিৎ দাসকে। যদিও ভোটপণ্ডিতদের একাংশের মতে, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে অভিষেকের হ্যাটট্রিক হওয়া কেউ রুখতে পারবে না। এ ছাড়াও দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়, বারাসতের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার, জয়নগরের তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল, কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ও নামছেন লড়াইয়ে। প্রত্যেকেই গত বারের নির্বাচিত সাংসদ। প্রত্যেকেই নিজের কেন্দ্র থেকেই লড়ছেন। শুধু বসিরহাট এবং যাদবপুরে প্রার্থী বদল করেছে রাজ্যের শাসকদল। বসিরহাটের বিদায়ী সাংসদ নুসরত জাহানের বদলে তৃণমূল এ বার প্রার্থী করেছে হাজি নুরুল ইসলামকে। যাদবপুরে গতবারের বিজয়ী প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর বদলে রাজ্যের শাসকদল প্রার্থী করেছে তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষকে।

সপ্তম দফার ভোটে নিজেদের প্রমাণ করার লড়াইও লড়বেন কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র এবং কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। রেখা সন্দেশখালির আন্দোলন থেকে বঙ্গ-রাজনীতির আলোকবৃত্তে উঠে এসেছেন। সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ আছড়ে পড়ার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের পর্দায় বার বার ভেসে উঠেছিল তাঁর মুখ। নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে অচিরেই ‘প্রতিবাদী মুখ’ হিসাবে পরিচিতি লাভ। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বারাসতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ। পরে নাকি মোদীর ‘কথাতেই’ দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে বসিরহাট কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে তাঁর প্রার্থী হওয়া! বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুলের সঙ্গে লড়াই তাঁর। অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তাপস গত ৬ মার্চ বিজেপিতে যোগ দেন তাপস। তৃণমূল এবং বিধায়কের পদ ছাড়েন তার কয়েক দিন আগে। তৃণমূল ছাড়ার কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তাপস। তাঁর দলত্যাগের প্রসঙ্গে আরও একটি নাম উঠে এসেছিল। তিনি কলকাতা উত্তর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ। তাঁর সঙ্গে তাপসের সম্পর্ক তৃণমূলে বরাবর ‘মধুর’ই ছিল। দলত্যাগের কথা ঘোষণার সময়েই তাপস জানান, তাঁর বাড়িতে ইডি হানার নেপথ্যে সুদীপের ‘হাত’ রয়েছে। তাপস বিজেপিতে যোগদানের পর লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে সুদীপের বিরুদ্ধে কলকাতা উত্তরেই টিকিট দিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী এবং সৃজন ভট্টাচার্য। সুজনের লড়াই দমদমে, তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সৌগতের সঙ্গে। অন্য দিকে, যাদবপুরে সিপিএমের তরুণ তুর্কি সৃজন লড়বেন যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে। হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের মালাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র কলকাতা দক্ষিণে তৃণমূল ভরসা রেখেছে তাঁর উপরেই। মথুরাপুরের তৃণমূলের প্রার্থী বাপি হালদার ভোট ময়দানে নতুন। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে লড়ছেন অশোক পুরকায়েত।

বাংলার সপ্তম দফায় ন’টি লোকসভা কেন্দ্রের সঙ্গেই বরাহনগর বিধানসভায় উপনির্বাচন। সেখানে লড়াই তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপির সজল ঘোষের।

রাজ্যের সপ্তম দফা নিয়ে প্রস্তুত কমিশনও। ন’টি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ৯৬৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কুইক রেসপন্স টিম থাকছে ৭৮৮টি। এ ছাড়াও ৩৩,২৯২ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকছেন সপ্তম দফায়।

সপ্তম দফার ভোটে ন’টি কেন্দ্রে মোট ভোটার এক কোটি ৬৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৩৪৫ জন। এঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৪৮১ জন। মহিলা ভোটার ৮০ লক্ষ ২০ হাজার ৩২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৫৩৮ জন। এ ছাড়া মোট ভোটারদের মধ্যে ১৮-১৯ বছর বয়সি ভোটার দু’লক্ষ ৭১ হাজার ৫৯৬ জন (মহিলা, পুরুষ এবং তৃতীয় লিঙ্গ মিলিয়ে)। ৮৫ বছরের বেশি বয়স এক লক্ষ ৩৭ হাজার ১৭২ জন ভোটারের। ১০০ বছর পেরিয়ে গিয়েছেন এমন ১,১৫৫ জন ভোটারও রয়েছেন রাজ্যের সপ্তম দফার নির্বাচনে। সপ্তম দফায় রাজ্যে মোট ১৭ হাজার ৪৭০টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে এর মধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ৩,৭৪৮টি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement