প্রচারে কঙ্গনা রানাউত। ছবি: পিটিআই।
তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভক্ত— প্রকাশ্যেই বলেন কঙ্গনা। কিন্তু তিনি যে মোদীর ফ্যাশনেরও ভক্ত, তা জানা গেল হিমাচলের মণ্ডী থেকে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করার পরে। হিমাচলে এলেই হিমাচলি টুপি পরেন মোদী। হিমাচলে ভোট থাকলে মোদী সেই টুপি মাথায় করে রাখেন প্রজাতন্ত্র দিবসের বক্তৃতায়। পাশের রাজ্যে সফরে গেলেও গায়ে জড়িয়ে নেন হিমাচলি শাল। কঙ্গনা সম্ভবত মোদীর থেকেই শিক্ষা নিয়েছেন। কারণ, প্রচারে কঙ্গনা আর হিমাচলি টুপিকে আলাদা করা ‘মুশকিল হি নহি! না মুমকিন’। শিরসজ্জার বিশেষ গুরুত্ব আছে হিমাচলে। পুরুষেরা হিমাচলি টুপি পরেন। মেয়েরা বিশেষ কায়দায় রঙিন কাপড় বেঁধে রাখেন মাথায়। যে প্রচারে টুপি পরেননি, সেখানে কঙ্গনাকে দেখা গিয়েছে মাথায় রঙিন কাপড় বেঁধে রাখতে। মোদীর মতো হিমাচলি শালও দিয়েছেন গায়ে।
তিনি হিমাচলেরই কন্যা। যে মণ্ডীতে তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি, সেই মণ্ডীরই এক গ্রামে কঙ্গনার জন্ম। তবে যোগসূত্র ওটুকুই। পড়াশোনা চণ্ডীগড় এবং দিল্লিতে থেকে। পরে চলে যান মুম্বইয়ে। ফলে মণ্ডীর ‘কুইন’-এর গায়ে ‘বহিরাগত’ ছাপ ছিল। সেই ছাপ মুছতে দিনরাত এক করেছেন। স্থানীয় উচ্চারণের টানে মানুষের সঙ্গে কথা বলা থেকে শুরু করে লোকগানের তালে নাচ, মন্দিরে গিয়ে উঠোন ঝাঁট দেওয়া— কিচ্ছু বাদ রাখেননি। তবে ভোটারদের চমকে দিয়েছেন নিজেকে অভিনয় জগতে অমিতাভ বচ্চনের ঠিক পরেই রেখে। একই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হিমাচল থেকে সাংসদ হলে সেই অভিনয় অবলীলায় ছেড়ে দেবেন! কারণ? কঙ্গনার মতে অভিনয়ের মতো ‘জাল’ জিনিস আর দু’টি নেই। কিন্তু তিনি নিজেও কি সেই ‘জাল’-জগতের সদস্য নন!
প্রায় দু’মাস ধরে প্রচার করছেন কঙ্গনা। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘ভোটের পরিশ্রমের কাছে ফিল্মজগতের তথাকথিত পরিশ্রমকে এখন হাস্যকর মনে হচ্ছে!’’ কিন্তু কঙ্গনার পরিশ্রম সার্থক তাঁকে দেখতে জমা হওয়া ভিড়ে। তাঁর সঙ্গে নিজস্বী তোলার ভিড় উপচে পড়ছে। কঙ্গনাকে জড়িয়ে ধরে নাচগানও করছেন মহিলারা। বলিউডের নায়িকাকে সামনে পেলে এই উচ্ছ্বাস স্বাভাবিক। তবে তাঁকে ঘিরে সভাগুলিতে দৈনন্দিন জীবনের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে তেমন আলোচনা দেখা গেল না।
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।