বিজয় নামদেবরাও ওয়াদেত্তিয়ার। —ফাইল চিত্র।
২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার সময়ে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন মুম্বই পুলিশের তৎকালীন অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের (এটিএস) প্রধান হেমন্ত করকরে। রবিবার মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের বিজয় নামদেবরাও ওয়াদেত্তিয়ার অবশ্য দাবি করেন, ২৬/১১ হামলায় যুক্ত সন্ত্রাসবাদী আজমল কসাভ নয়, করকরেকে হত্যা করেছেন রাষ্ট্রায় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশকর্মী। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপিও।
২৬/১১ মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসাবে আদালতে সওয়াল করেছিলেন উজ্জ্বল নিকম। এ বার তাঁকে মুম্বই উত্তর-মধ্য কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। রবিবার উজ্জ্বলকে আক্রমণ করতে গিয়েই ওই করকরেকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে আনেন মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা। বলেন, “নিকম কংগ্রেসকে অপদস্থ করতে বিরিয়ানি প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। কেউ কি কসাভকে বিরিয়ানি দেবে? পরে নিজের মুখেই সত্যটা স্বীকার করে নেন উজ্জ্বল নিকম। উনি কেমন আইনজীবী? উনি এক জন বিশ্বাসঘাতক।” প্রসঙ্গত, জেলের মধ্যে কসাভ বিরিয়ানি খেতে চাইছেন বলে আদালতে দাবি করেছিলেন উজ্জ্বল। তা নিয়ে সেই সময় দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। বিচারপর্বের শেষে কসাভের ফাঁসির সাজা হয়। পরে উজ্জ্বল স্বীকার করে নেন, কসাভ কোনও দিনই বিরিয়ানি খেতে চাননি এবং তাঁকে তা দেওয়াও হয়নি।
মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতার মন্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণের পথে হেঁটেছে বিজেপিও। বিজেপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস বলেন, “বিরোধী দলনেতার মতে উজ্জ্বল নিকম কসাভকে অপমান করেছেন। কসাভ সন্ত্রাসবাদী অথচ কংগ্রেস তাঁকে নিয়ে চিন্তিত।” তার পরই বিরোধীদের তোপ দেগে ফডণবীস দাবি করেন, বিজেপি উজ্জ্বলকে সমর্থন করছে আর বিপক্ষে থাকা দলগুলি সমর্থন করছে কসাভকে। বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেস নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক অক্ষুন্ন রাখতেই এই ধরনের মন্তব্য করছে।
তবে বিতর্ক এবং সমালোচনার মুখেও পিছু হটতে নারাজ মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা বিজয়। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তিনি ২০০৯ সালে প্রকাশিত এসএম মুশরিফের ‘হু কিলড্ করকরে’ বইটির কিছু অংশকে উদ্ধৃত করছেন। এসএম মুশরিফ মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন আইজি এবং সাবেক এনসিপির নেতা হাসান মুশরিফের ভাই। বিজয়ের দাবি, সেই বইয়ে লেখা রয়েছে, কোনও সন্ত্রাসবাদীর গুলিতে প্রাণ হারাননি করকরে। মুম্বই হামলায় সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে এক মাত্র কসাভকে জীবিত অবস্থায় ধরেছিল পুলিশ। বিচারপর্বের পর তাঁর ফাঁসি হয়। কসাভের ফাঁসির দাবিতে সওয়াল করা উজ্জ্বল এ বার বিজেপির প্রার্থী।