কাশীপুরে সিপিএমের সমাবেশে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। ছবি: সঙ্গীত নাগ
কাশীপুর ও পুঞ্চায় সভা করলেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। চেলিয়ামায় ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র। পাড়া ও রঘুনাথপুরে থাকলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সৃজন ভট্টাচার্য। সোমবার সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব এ ভাবেই পুরুলিয়া জেলা জুড়ে প্রচারে নামলেন। রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাশাপাশি বুথে বুথে দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানালেন মীনাক্ষী।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের তদন্ত চেয়ে, একশো দিন কাজের প্রকল্পে বকেয়া মজুরি মেটানো শ্রমিকদের নামের তালিকা প্রতি পঞ্চায়েতে টাঙানো— সহ নানা দাবিতে ব্লকে স্মারকলিপি ও থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম। দল সূত্রের খবর, মার্চের ৪, ৬, ৮, ১২— এই চার দিন পুরুলিয়ায় ওই কর্মসূচি করা হবে। কর্মসূচির প্রথম দিনে জেলার একাংশে একাধিক সভা করল সিপিএম।
এ দিন মীনাক্ষী বলেন, ‘‘শুধু ভাষণে নয়, লড়াইটা হবে বুথে। নিজের পাড়ার বুথের প্রতিবাদী, সাহসী, যুক্তিবাদী মানুষদের এককাট্টা করে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তুলুন।”
তিনি একশো দিনের কাজ নিয়ে রাজ্য সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি তোলেন। বলেন, ‘‘কারা কাজ করল, কাদের জবকার্ড আছে, কাদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হল, আর কারা বাকি থাকল— ক্ষমতা থাকলে সেই তথ্য সামনে আনুক রাজ্য সরকার।” কেন বিজেপির বিধায়ক,সাংসদরা একশো দিনের কাজে দুর্নীতি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করছেন না, কেন আদালতে যাচ্ছেন না, সেই প্রশ্নও তোলেন যুবনেত্রী। প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য বাড়ি প্রকল্প নিয়ে মিথ্যাচার করছেন বলে তাঁর অভিযোগ। বিকালে বৃষ্টি নামায় পুঞ্চার সভা কিছুটা ব্যাহত হয়। তবে বৃষ্টি থামলে ডাকবাংলো এলাকায় সভা হয়। সেখানে কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিত ছিল ভাল।
রঘুনাথপুরের সভায় সিপিএমের রাজ্য নেতা সৃজন দাবি করছেন, ‘‘রঘুনাথপুরে শিল্পায়নের কর্মকাণ্ড হয়েছে প্রয়াত সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার হাত ধরেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা, সিঙ্গাপুর, লন্ডনে গিয়ে শুধু শিল্প সম্মেলন করেছেন। কিন্তু শিল্প হয়নি। শুধু সম্মেলনই হয়েছে।”
দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের অভিযোগ, ‘‘অর্ধসমাপ্ত ইস্পাত কারখানার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পায়নের বার্তা দিচ্ছেন। আর প্রধানমন্ত্রী আগেই শিলান্যাস হওয়া ডিভিসির দ্বিতীয় পর্যায়ের ফের শিলান্যাস করে শিল্পায়নের কথা বলছেন।” তাঁর দাবি, ইউপিএ-২ আমলেই তৎকালীন বিদ্যুৎমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আরটিপিএস-এ এসে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে ডিভিসি সূত্রের খবর, পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়। পরে ফের শুরুর জন্য সবুজ সঙ্কেত দেয় কেন্দ্র।
তবে লোকসভা নির্বাচনে বামেরা দাগ কাটতে পারবে না বলে দাবি করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার কটাক্ষ, ‘‘যাঁরা একশো দিনের কাজে বঞ্চিত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে কোনও দিন আন্দোলন করেননি, তাঁদের মুখে একথা মানায় না।’’ তাঁর দাবি, কারা বকেয়া মজুরি পাবে, সে সমীক্ষা প্রশাসন করেছে। সেই তালিকা পঞ্চায়েতে টাঙানো আছে। বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ধাপেধাপে সমস্ত কাঁচা বাড়িকে পাকা করা হবে। এটাই ‘মোদী গ্যারান্টি’।’’