মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
লোকসভা ভোটের সাফল্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে ‘কাঁটামুক্ত’ করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যে রাজ্যের প্রাপ্য আদায়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে চাপ তৈরির কাজ শুরু করে দেবে তারা। সেই ইঙ্গিত দিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “অন্না হজারে দিল্লিতে আন্দোলন করেছিলেন। আমরাও আমাদের দাবি নিয়ে দিল্লিতে আন্দোলনে বসে পড়ব।” শক্তিবৃদ্ধির পরে জাতীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চান তিনি।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ এ বার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগে ১০০ দিনের কাজ ও আবাস প্রকল্পের মতো একাধিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পাল্টা তৃণমূলও তাকেই রাজ্যের প্রতি ‘বঞ্চনা’ হিসেবে ব্যাপক প্রচার চালায় গোটা ভোট-পর্ব জুড়ে। সেই বিষয়টিকেই বিধানসভা ভোটে কাজে লাগাতে চাইছে তারা। সেই ইঙ্গিত দিয়ে মমতা এ দিন বলেন, “আমি কিছু চাই না। আমি চাই, সব রাজ্যগুলির যা প্রাপ্য, তা দিয়ে দেওয়া হোক। যে কাজ আটকে আছে, সেগুলি হোক।” দিল্লিতে এনডিএ সরকার হলেও এই প্রাপ্য নিয়ে দলের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রয়োজন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীর এ দিনের বক্তব্যে।
কেন্দ্রকে নিশানা করেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে দু’মাসের জনসংযোগ কর্মসূচি করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, জেলায় জেলায় কাজ করে টাকা না-পাওয়া মানুষের তালিকায় তৈরি করা এবং রাজ্য সরকারের তরফে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়া এ বারের ভোটে তৃণমূলকে বড় সাহায্য করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই বিধানসভা ভোটের আগেও প্রাপ্য না পেলে বিষয়টিকে তারা কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চাইবে না। শক্তিবৃদ্ধিতে তা দলকে বাড়তি বিশ্বাসযোগ্যতা দেবে বলেই দাবি তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দু শেখর রায়ের। তাঁর বক্তব্য, “এটা তৃণমূলের নয়, মানুষের বিষয়। তাই ভোট থাক বা না-থাক, আমরা তা ছাড়তে পারি না।”
‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে থাকার কথা ঘোষণা করলেও এ রাজ্যে কংগ্রেস বা সিপিএমের সংস্রব ছাড়াই বিজেপিকে পরাজিত করেছেন মমতা। ফলে, জোটের দায় ছাড়াই এই সাফল্যকে তিনি বিধানসভা ভোটে ব্যবহার করতে পারবেন। বরং, আসনের নিরিখে রাজ্যে দুর্বল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংগঠনেও এ বার ঝাড়পোঁছ করতে চাইছে তৃণমূল।