মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিজের ঘরে এসি ব্যবহার করেন না বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে কোথাও গেলে এসি ব্যবহার করলেও তার তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে থাকে না কখনও। রাজ্যের মানুষকেও এসি কম ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। নিজের হেলিকপ্টার-যাত্রার অস্বস্তির কথাও শুনিয়েছেন জনসভায়।
বুধবার বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে প্রচার করতে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানেই তিনি জানান, তাপমাত্রা খুব বেশি কমিয়ে এসি ব্যবহার করলে বিদ্যুতের অপচয় হয়। রাজ্যবাসীকে সে ভাবে এসি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘অনেকে আজকাল দার্জিলিঙে থাকবেন বলে ১৭ ডিগ্রিতে এসি চালান। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিদ্যুৎ অপচয় করা উচিত নয়। আমি নিজেও এত এসি ব্যবহার করি না। যে ঘরে আমি থাকি, সেখানে এসি ব্যবহার করি না। বাইরে থাকলেও ২৭ ডিগ্রির নীচে কখনও এসি চালাই না। আপনারাও বিদ্যুৎ বাঁচান। ২৫ ডিগ্রির নীচে এসি চালাবেন না।’’
বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে এবং সঙ্কট মেটাতেই ডেউচা পাঁচামিতে কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান মমতা। বলেন, ‘‘আমি ডেউচা পাঁচামি করছি, যাতে আগামী ১০০ বছর মানুষ সস্তায় বিদ্যুৎ পান। যাতে এখানে বিদ্যুতের কোনও অভাব না হয়। ডেউচা পাঁচামি হলে এক লক্ষের বেশি মানুষের চাকরি হবে। সে চাকরি এখানকার মানুষই পাবেন। রাজ্যের। দু’পাশ দিয়ে শিল্প গড়ে উঠছে।’’
আউশগ্রামের সভা থেকে নিজের হেলিকপ্টার যাত্রা নিয়েও কথা বলেন মমতা। জানান, ওই যাত্রা তাঁর পক্ষে অত্যন্ত অস্বস্তিকর। কারণ, হেলিকপ্টারের ভিতরে প্রচণ্ড তাপ সহ্য করতে হয় তাঁকে। মমতা বলেন, ‘‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাকে হেলিকপ্টারে যাতায়াত করতে হয়। ৩১ মার্চ থেকে আমি বাইরে পড়ে আছি। অনেকে হেলিকপ্টারে চড়ে আসা নিয়ে অনেক কথা বলেন। তাঁদের বলব, ওতে এক বার বসে দেখুন। ওটা আগুনের মতো জ্বলে। ওখানে কোনও ঠান্ডা নেই। ভিতরে লু বইছে। রোদে কপ্টার থাকা মানে, ৫০ ডিগ্রিতে আমাদের আসতে হয়। ওখানেও গরম আবার মাঠেও গরম। তীব্র দহনে আমি ছুটে বেড়াচ্ছি। কপ্টারের চেয়ে গাড়ি অনেক ভাল।’’
এই গরমে দীর্ঘস্থায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে আরও এক বার কটাক্ষ করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্যই কমিশন তিন মাস ধরে ভোটপ্রক্রিয়া চালাচ্ছে। মমতার কথায়, ‘‘এই তীব্র দহনের মধ্যে তিন মাস ধরে ভোট চলছে। কমিশন বিজেপিকে সন্তুষ্ট করতে এ ভাবে ভোটটা ফেলেছে। আমি জানতে চাই, এমন কী হল যে, জুন মাস পর্যন্ত ভোট চালিয়ে নিয়ে যেতে হল? অন্যান্য বার তো অনেক আগেই ভোট মিটে যায়।’’ মোদী, অমিত শাহরা সারা দেশের নানা প্রান্তে সময় নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন এবং প্রচার করবেন, এই স্বার্থেই বেশি দিন ধরে ভোট রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা।