মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পয়লা বৈশাখের আগের দিন কালী মন্দিরে পুজো দিতে হয় কালীঘাট মন্দির সুন্দর করে সাজানো হয়েছে, এসে দেখে যাবেন আপনারা। বললেন মমতা।
বালুরঘাট এবং রায়গঞ্জে পরবর্তী সভা মমতার। বললেন, ‘‘বালুরঘাটে তপন এবং রায়গঞ্জের হেমতাবাদে সভা আছে। শনিবার আবহাওয়া খারাপ থাকবে। তাই আজই রায়গঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়ে যাচ্ছি। আবার ফিরব আপনাদের কাছে আসব ইদের পর’’।
১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে মমতার আক্রমণ বিজেপিকে। বললেন, ‘‘বাংলা থেকে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গিয়েছে। অথচ ১০০ দিনের কাজের ২ লক্ষ কোটি টাকা দিতে পারল না। ওই টাকা থেকেই দেবে। মাছের তেলেই মাছ ভাজবে, তা-ও দিল না। ওরা আমাদের টাকা মেরে করছে ফাঁকা।’’
মমতা বললেন, ‘‘কাশ্মীরের প্রাক্তন গভর্নর বলেছেন, পুলওয়ামার ঘটনা মিথ্যা ছিল। ওমনি তার বাড়িতে রেড করিয়ে দিল। কিছু না কিছু প্রতিবার করতেই হবে। কিছু না পারলে বাড়িতে ছাড়পোকা ঢুকিয়ে দেবে। তারা কুটুস কুটুস কামড়াবে আপনাকে।’’
সিপিএম, কংগ্রেস আর আইএসএফকে বিজেপির সঙ্গে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করলেন মমতা। বললেন, ‘‘একটা মুসলিম পার্টি আছে। তারা বিজেপির শাগরেদ। মনে রাখবেন দিল্লিতে আমরা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় আছি। কিন্তু বাংলায় একটা ভোটও অন্য পার্টিকে দেবেন না। ভোট ভাগ করবেন না।’’
মমতা বললেন, ‘‘এখানকার বিজেপি নেতারা বলে দেবেন, ওঁর বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্স রেড কর, এর বাড়িতে ইডি কর, ওর বাড়িতে সিডি কর, তৃণমূল কংগ্রেস করলেই সব চোর। আর তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে! তোমার পকেট ভর্তি কালো টাকায়। তোমার সারা শরীর ঢেকে গিয়েছে কালো টাকায়।’’
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বললেন, মুসলিম দেখলেই গা কাঁপে ওদের একটু বেশি। দেখায়। রামনবমী নিয়ে নিজেরাই দাঙ্গা করল, তাতে এনআইএকে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমার কাছে ডকুমেন্ট আছে, বিজেপির নেতা জিতেন তিওয়ারি এনআইএ এসপির সঙ্গে মিটিং করছে। আমরা তার কমপ্লেন পাঠিয়েছি।’’
আগের দিন অভিষেক পরোক্ষে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অনুব্রতের। জলপাইগুড়ির মঞ্চে দাঁড়িয়ে বীরভূমের তৃণমূল নেতাকে নিয়ে মন্তব্য করলেন মমতাও। বললেন, ‘‘ ওরা যা আইন করেছে, তাতে বলা হয়েছে, যেকোনও সময় যেকোনও কাউকে গ্রেফতার করা যাবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে নিয়েছে। আমাদেরও কেষ্টকে গ্রেফতার করে নিয়েছে। ’’
এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন মমতা। বললেন, ‘‘মোদীবাবুকে বলুন আপনাকে দশ বছর ধরে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করেছে কারা? আমরা যদি নাগরিকই না হই তা হলে আমাদের ভোটটা নিলেন কী করে? মমতা বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী কর্পোরেশেন। পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা এ সব তো জনতার ভোটেই হয়। গণতন্ত্রে চলে আপনি সেই গণতনন্ত্র টাকেই হত্যা করে দিচেছেন? এক দিনে ১৪৭ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করে পাস করিয়ে নিলেন ৩৯টি আইন, সেই আইনে কী আছে হযবরল কিছুই জানি না!’’
দিল্লিতে কী হবে বাংলা ঠিক করে দেবে মনে রাখবেন। বাংলাই তৈরি করবে ‘ইন্ডিয়া’। জলপাইগুড়িতে মমতা।
নাম না করে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককে গুণ্ডা এবং চোর বললেন মমতা।
জলপাইগুড়ির মঞ্চে বারবার মোদীর নাম করে আক্রমণ মমতার। বললেন, ‘‘মোদী বাবু বলুন মানুষের টাকাগুলো কোথায় গেল? মোদী বাবু বলুন, সাক্ষী যে দেশের হয়ে কুস্তি লড়ে আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পেল, তার উপর অত্যাচার করা হল যখন, যখন হাথরসের ঘটনা ঘটল, যখন মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচার করা হল, যখন অসমে এনআরসি করে ১৯ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করা হল, তখন কি কুম্ভকর্ণের মতো নাক ডেকে ঘুমোচ্ছিলেন? ’’
মমতা বললেন জলপাইগুড়িতে প্রচুর উন্নয়নের কাজ আমরা করেছি। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনও আমি করে দিয়েছিলাম। এখানে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল সব করেছি। রাজবংশীদের জন্য কাজ করেছি।
মমতা বললেন, ‘‘মোদী তো গ্যারান্টির কথা বলেন। জলপাইগুড়িতে যারা ঘর হারিয়েছে , তাদের জন্য গ্যারান্টি কোথায়। ঝড়ের সময় তোমরা আসবে না, আর গ্যারান্টির দাবি করবে। মনে রাখবেন গ্যারান্টি যদি কারও কাজ করে, তবে সেটা আমাদের গ্যারান্টি।’’
জলপাইগুড়ির ঝড়ে আক্রান্ত মানুষের জন্য টাকা দিয়ে সাহায্য করতে পারছেন না, তা নিয়ে আফশোস করলেন মমতা। বললেন, ‘‘ঝড়ের টাকা দিতে পারছি না কমিশন অনুমতি দিচ্ছে না বলে। টাকা রেডি আছে। কমিশন বললেই দিয়ে দেব। কিন্তু বিজেপি তা করতে দেবে না।’’
মমতা বললেন, ‘‘এই তো মোদী এসেছিলেন! কিন্তু একটি কথাও বলেননি জলপাইগুড়ির ঝড় নিয়ে। কী করে বলবেন। সময় ছিল না। এখানকার মানুষকে তিনি ভুলে গিয়েছেন।’’
জলপাইগুড়ির ঝড় নিয়ে কথা বলেননি মোদী, তা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন মমতা।