Lok Sabha Election 2024

‘১৯ লক্ষ নিখোঁজ ইভিএম কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি’! ভোটবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধীদের সতর্ক হতে বললেন মমতা

প্রথম দুই দফার ভোট হয়ে গিয়েছে। ১১ দিন পর কমিশন জানিয়েছে, কোথায় কত শতাংশ ভোট পড়েছে। কমিশনের এই বিলম্ব নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুললেন মমতা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ১৮:০১
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে কত শতাংশ ভোট পড়েছে, মঙ্গলবার সেই হিসাব প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোট হয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ দিন পর এই চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে। সেই হিসাবেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ফরাক্কা এবং বহরমপুরের জনসভা থেকে কমিশনের এই ভোট শতাংশের হিসাব নিয়ে বিজেপির কারচুপির সন্দেহের কথা জানান তিনি। এ বিষয়ে দেশের সব বিরোধী দলকে একজোট হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। কমিশনের কাছে ইভিএম এবং ভোটারের সংখ্যার হিসাবও জানতে চেয়েছেন তিনি।

Advertisement

দেশে প্রথম দফার নির্বাচন হয় ১৯ এপ্রিল। সে দিন বাংলার তিন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। কমিশন সূত্রে ২০ তারিখ জানা গিয়েছিল, প্রথম দফায় ভোট পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এর পর দ্বিতীয় দফার ভোট হয়েছে ২৬ এপ্রিল। সে দিনও বাংলার তিনটি কেন্দ্রে ভোট হয়। কমিশন সূত্রে জানা যায়, ভোট পড়েছে ৬০.৯৬ শতাংশ। কিন্তু ভোটের চূড়ান্ত হার এত দিন জানায়নি কমিশন। মঙ্গলবার তাদের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, প্রথম দফায় দেশে ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ, আগে যা জানা গিয়েছিল, তার চেয়ে প্রায় ছয় শতাংশ বেড়ে গিয়েছে কমিশনের হিসাব। যা নিয়ে বুধবার সন্দেহ প্রকাশ করেন মমতা।

ফরাক্কার জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘’১৯ লক্ষ ইভিএম এখনও ‘মিসিং’। আমরা তার খোঁজ করেছি অনেক বার। ভুয়ো ইভিএম অন্য জায়গা থেকে এনে ওরা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। যেখানে বিজেপির ভোট কম, সেখানে বাড়তি মেশিন ঢোকাচ্ছে।’’

Advertisement

বহরমপুরের সভা থেকেও একই প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। বিরোধী দলগুলিকে এ বিষয়ে একজোট হওয়ার ডাক দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি সব বিরোধী দলকে বলব, এ দিকে নজর দিন। নিজের নিজের রাজ্যে ইভিএমের হিসাব রাখুন। বিজেপি যেখানে কম ভোট পাচ্ছে, সেখানে ওরা রাতের অন্ধকারে তালা ভেঙে গণনাকেন্দ্রে ঢুকছে। ইভিএম বদলে দিচ্ছে।’’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশেও গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা বজায় রাখার দাবি জানান মমতা। বলেন, আমি কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করছি না। কিন্তু কমিশনকে বলব, আপনারা গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা বজায় রাখুন। কোন কেন্দ্রে কত ভোটার, কতগুলি ইভিএম, আমি হিসাব চাই। হঠাৎ করে ভোট বেড়ে গেল কী ভাবে? ইতিমধ্যে আমার দল কমিশনকে এই সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে। বিরোধী দলগুলিকেও প্রশ্ন তুলতে বলব।’’

ভোটের চূড়ান্ত হার প্রকাশ নিয়ে কমিশনের বিলম্বে আগেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, ফরওয়ার্ড ব্লকের জি দেবরাজন, সকলেই এই বিলম্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ বার ভোটবৃদ্ধির হার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন মমতাও।

এখনও পাঁচ দফার ভোট বাকি আছে দেশে। পরবর্তী ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। তারই প্রচারে বুধবার মালদহে গিয়েছিলেন মমতা। সেখান থেকে একের পর এক ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্যই নির্বাচন কমিশন এই কাঠফাটা গরমে তিন মাস ধরে ভোট ফেলেছে। মমতা বলেন, ‘‘গরমে সকলে কষ্ট পাচ্ছেন। এর মধ্যে তিন মাস ধরে ভোট চলছে। কেন, কার কথায় কমিশন এটা করেছে? বিজেপির নেতাদের সুবিধার জন্য এটা করা হয়েছে। ওঁরা যাতে আরাম করে সারা দেশে ঘুরে ঘুরে প্রচার করতে পারেন, যাতে প্রচারের পর্যাপ্ত সময় পান, সেটাই কমিশনের লক্ষ্য।’’ তামিলনাড়ু, কেরলে ভোট ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনেও বাংলার প্রতি ‘নিষ্ঠুরতা’ এবং ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ এনেছেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement