মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ‘হিরের টুকরো’ আর একই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ‘গুন্ডা’। নাম না করে কেন্দ্রের বিদায়ী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক সম্পর্কে বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় গুমানিরহাট হাইস্কুলের সভামঞ্চ থেকে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজবংশী মানুষদের কে ভাল, কে খারাপ— তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কোচবিহারেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা থেকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন নিশীথও।
নাম না করে নিশীথকে আক্রমণ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আপনাদের এক জন বাবু যার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কেস। আমরা দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি, আমাদের দলে ছিল আপদ, আজ বিজেপির হয়েছে সম্পদ। শুধু গুন্ডামি করে বেড়ায়। আমি শুনেছি, সেন্ট্রাল গভর্মেন্টের পুলিশের টুপিও পরে। আমি ভিডিয়োটা চেয়ে পাঠিয়েছি। চার-পাঁচ গাড়ি পুলিশ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কয়েক দিন আগে উদয়ন গুহের (উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী) গাড়িতে আক্রমণ করেছিল। অসমের
সঙ্গেও যোগাযোগ।”
সেখানেই থেমে না থেকে তিনি বলেন, “বাবু আমি কী বলব কী কী কেস আছে? আমি সব নথি দিয়ে দেব স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে। তিনি আজ নাকি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এটা লজ্জার। গণতন্ত্র কলঙ্কিত হয়েছে। আর রাজবংশী লোক ছিল না? ভাল লোক আর ছিল না।” এর পরেই তৃণমূল প্রার্থী জগদীশ বসুনিয়ার নাম উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “আমাদের প্রার্থীকে দেখুন। জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া এক জন মাটির মানুষ। একটা হিরে। কথা কম বলে, কিন্তু কাজ বেশি করে। আর ওদের প্রার্থী অমাবস্যার কালো ছায়ায় ঢেকে গিয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “কয়লা ধুলে যায় না। ময়লা ধুলে যায় না। দাগ দুটোই থাকবে। পাঁচ বছর ছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয়ে
নিজের উন্নয়ন করেছেন। কুড়ি-তিরিশটা গাড়ি নিয়ে ঘুরেছেন। রাজা, জমিদারদের মতো থেকেছেন। কোচবিহারে মানুষের জন্য একটা কাজও করেননি।”
এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর মাথাভাঙার সভার পরে কোচবিহার রাসমেলার মাঠে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মঞ্চ থেকে নিশীথ প্রামাণিকও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দাগেন। নিশীথ বলেন, “কোচবিহারে এসে বড় বড় কথা বলছেন। মামলার কথা বলছেন। কিছু মিথ্যে মামলা করা হয়েছে। যার হলফনামা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি। পিসির কাছে তার ভাইপো একা ভাল। কোচবিহার থেকে এক জন রাজবংশী ছেলে দিল্লিতে গিয়ে মোদীজির হাত শক্ত করছেন, এটা পিসিমণির সহ্য হয় না। তাই এখানে এসে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।” এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএসএফ নিয়ে নিয়ে বিজেপি প্রার্থী এলাকায় গিয়ে ভয় দেখালে, মেয়েরা থানায় ডায়েরি করবেন। নিশ্চিন্তে থাকবেন, আমি দেখে নেব। থানা ডায়েরি নিতে অস্বীকার করলে আমাকে লিখিত জানাবেন।”