মাথার ত্বকে সোরিয়াসিস বা সেবোরিয়েক ডার্মাটাইটিস হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক।
সিঁথির কাছে চুল সরালেই লাল লাল র্যাশ দেখা যায়। মাথার তালুতে চুলকানি, গুটি গুটি ব্রণও নাজেহাল করে মাঝেমধ্যেই। চুল থেকে লাগাতার সাদা খোসার মতো ঝরতে থাকলে তা খুশকি ভেবে ভুল করেন অনেকেই। মাথার ত্বকে নানা রকম সংক্রমণজনিত রোগ হতে পারে। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি’ জানাচ্ছে, মাথার ত্বকে ব্রণ, অ্যালার্জিজনিত সংক্রমণ, সিস্ট, সোরিয়াসিস, এমনকি সেবোরিয়েক ডার্মাটাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। তাই মাথার ত্বকে লালচে র্যাশ দেখলে বা খোসার মতো উঠতে থাকলে তা এড়িয়ে গেলে চলবে না।
‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি’-র ত্বক চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সোরিয়াসিসে মাথার ত্বক থেকে মাছের আঁশের মতো চামড়া উঠতে শুরু করে। প্রচণ্ড প্রদাহ হয়, সারা ক্ষণ চুলকানি হতে থাকে। মাথার ত্বক লালচে র্যাশে ভরে যায়। আবার সেবোরিয়েক ডার্মাটাইটিস হলও এমন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। এই রোগে চামড়ার বিভিন্ন জায়গায় মলিন রুপোলি আঁশযুক্ত ছোপ দেখা যায় যা উঠে যাওয়ার পর লালচে আভা বা সামান্য রক্তক্ষরণ হতে পারে। সিস্টও হয় মাথার ত্বকে, যাকে বলে পিলার সিস্ট। ছোট ছোট ফুস্কুড়ির মতো দেখতে হয়। চুলকালে সেখানে ঘা হয়ে যেতে পারে।
মাথার ত্বকের যত্ন নেবেন কী উপায়ে?
১) প্রচণ্ড চুলকানি বা জ্বালা-যন্ত্রণা হলে গরম সেঁক দিতে পারেন। একটি পাতলা সুতির কাপড় হালকা গরম করে নিয়ে মাথার ত্বকে চেপে রাখতে হবে কিছু ক্ষণ। এতে জ্বালা অনেকটাই কমে যাবে।
২) টি ট্রি অয়েল কার্যকরী হতে পারে। এই তেলের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। নারকেল তেলে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকের অ্যালার্জির জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে। তার পর ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত দু’বার করলেও র্যাশ বা ব্রণর সমস্যা কমতে পারে।
৩) মাথার ত্বকের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে পারে অ্যালো ভেরা জেল। স্নানের পরে লাগানোই শ্রেয়। কারণ সেই সময়ে ত্বক কিছুটা নরম থাকে।
৪) জলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে মাথায় মাখলে, ব্রণ-ফুস্কুড়ির সমস্যা দূর হতে পারে। শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। এতে অ্যালার্জিজনিত সংক্রমণও দূর হতে পারে।
৫)মাথার ত্বকে ব্রণর সমস্যা বাড়লে সেখানে মধু ও হলুদ লাগাতে পারেন। কাঁচা হলুদ বেটে তার সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে। ১ ঘণ্টা পরে ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিতে হবে।
৬) নিম তেল বা রসুনের তেলও খুবই উপকারী। নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে মাথার ত্বক ভাল থাকবে।
তবে সোরিয়াসিসের সমস্যা বাড়াবাড়ি রকম হলে, ত্বক চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে নিজে থেকে কিছু ব্যবহার করবেন না।