Mamata Banerjee vs Abhijit Ganguly

তমলুকে অভিজিতের নাম মুখে আনলেন না মমতা! কারণ কি মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে প্রকাশ্যে ‘অশালীন’ মন্তব্য?

এমন নয় যে, এর আগে প্রাক্তন বিচারপতিকে রাজনৈতিক আক্রমণ করেননি মমতা। বিচারপতি থাকাকালীন পদমর্যাদাজনিত সৌজন্য দেখালেও বিজেপিতে যোগদানের পরে আক্রমণ করার সুযোগ ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ১৮:০৭
Share:

(বাঁ দিকে) প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের প্রচারে তমলুকে গিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামোচ্চারণ করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তমলুকে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ।

Advertisement

ভোটের প্রচারে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের মঞ্চ থেকে নরেন্দ্র মোদী, শুভেন্দু অধিকারীদের নিজস্ব ভঙ্গিমায় আক্রমণ করছিলেন তৃণমূলনেত্রী। অনেকেই আগ্রহী ছিলেন জানতে যে, অভিজিৎ সম্পর্কে তিনি কী বলেন। কিন্তু ৩৬ মিনিটের বক্তৃতায় অভিজিতের প্রসঙ্গ তো দূর, তাঁর নামটাও মুখে আনলেন না মমতা। এমনকি, শিক্ষকদের চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে বিজেপিকে অনর্গল আক্রমণেও উপেক্ষিত রয়ে গেলেন এককালে সেই রায় লেখা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ।

এমন নয় যে, প্রাক্তন বিচারপতিকে রাজনৈতিক আক্রমণ করেন না মমতা। তিনি বিচারপতি থাকাকালীন পদমর্যাদাজনিত সৌজন্য দেখালেও বিজেপিতে যোগদানের পরে অভিজিৎকে আক্রমণ করার কোনও সুযোগ ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। কখনও তাঁকে ‘বিচারপতির আসনে বসা কেউটে সাপ’ বলে কটাক্ষ করেছেন, কখনও তাঁকে ‘বিচারালয়ের কলঙ্ক’ বলে অভিহিত করে ‘দেহত্যাগে’র পরামর্শ দিয়েছেন। তা হলে বৃহস্পতিবারের উপেক্ষা কী জন্য?

Advertisement

অনেকেরই অনুমান, বৃহস্পতিবারের ‘উপেক্ষা’ বুধবারের ‘অশালীন’ মন্তব্যের জন্য। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার মমতার বক্তৃতার অব্যবহিত পরেই তৃণমূল একটি পোস্ট করে। তাতে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে ‘কুৎসিত এবং অশালীন’ ভাষায় আক্রমণ করেছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ। বুধবার হলদিয়ার চৈতন্যপুরে একটি সভা ছিল তাঁর। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে তিনি বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও?’’ সে কথা উল্লেখ করেই রাজ্যের শাসকদল তার কড়া নিন্দা করেছে। হলদিয়ার ওই সভার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।) সেখানে অভিজিৎকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘তৃণমূল বলছে, রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে কেউ ৮ লক্ষ টাকা গুঁজে দিলে চাকরি হয়, কেউ ১০ লক্ষ টাকা দিলে রেশন হাওয়া হয়ে যায়! কেন তোমার দাম ১০ লক্ষ টাকা? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করাও বলে? আর রেখা পাত্র গরিব মানুষ, লোকের বাড়িতে কাজ করে, আমাদের প্রার্থী। সে জন্য তাঁকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়?’’

সেখানেই না থেমে প্রাক্তন বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘এক জন মহিলা হয়ে এক মহিলা সম্পর্কে উনি এই মন্তব্য করেন কী করে? উনি আদৌ মহিলা কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার!’’ অভিজিতের ওই মন্তব্যের সমালোচনা করে তৃণমূল লিখেছে, ‘‘উনি ভদ্রতার সীমা লঙ্ঘন করে এতটাই নীচে নেমেছেন যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর দাম ঠিক করছেন! এ কথা বলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অসম্মানিত করার পাশাপাশি বাংলার মহিলাদেরও অসম্মান করেছেন।’’ অভিজিতের ওই মন্তব্যের জন্য এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তাঁকে ‘নারীবিরোধী’ বলে মন্তব্য করে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে তৃণমূল। তবে মমতা ওই বিষয়ে একটি শব্দও বলেননি। তিনি তমলুকের সভায় জনতাকে লক্ষ্য করে বলেছেন, ‘‘আমার পার্টি আপনাদের টাকা দেবেও না। চাইবে না। আমরা কারও পকেটে টাকা গুঁজে দিয়ে আসতে পারব না। আর পার্টির নামে টাকা চাইলে আপনারাও দেবেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement