—প্রতীকী চিত্র।
পদ্মাপাড়ের বিধানসভা জলঙ্গি বরাবর দখলে থেকেছে বামেদের। ‘লাল দুর্গ’ হিসেবে পরিচিতি ছিল এই বিধানসভার। রাজ্যে বাম শাসনের অবসান ঘটলেও জলঙ্গি থেকে লালকে সরাতে পারেনি তৃণমূল। কিন্তু পরবর্তী কালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে জলঙ্গির বামেদের বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। আর তার পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে জিতেছেন তিনি। বাম-কংগ্রেসের মধ্যে আসন-রফা হলেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের ভোট গিয়ে পড়েছিল তৃণমূলের ঘরে।
একদিকে কংগ্রেসের প্রার্থী না থাকা, অন্যদিকে এনআরসি হাওয়া দুটো মিলেই ৭৯,২৭৬ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন রাজ্জাক। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের পরে থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে। বিধায়কের সঙ্গে তৎকালীন জলঙ্গির ব্লক তৃণমূল নেতা রাকিবুল ইসলামের দ্বন্দ্ব চলে আসে প্রকাশ্যে। সেই দ্বন্দ্ব এখনও পর্যন্ত থামেনি। ফলে লোকসভা নির্বাচনে তার যে প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই রাজনৈতিক মহলে। কেবল বিরোধীরা নয়, শাসক দলের নেতাকর্মীরাও বলছেন, গোষ্ঠীকোন্দল ডোবাতে পারে তৃণমূলকে।
যদিও জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘যে ক’জন বিরোধী আছে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। আমরা মনে করি না, দলে গোষ্ঠীকোন্দল আছে। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই পরিষ্কার হয়ে যাবে কত ধানে কত চাল।" এ নিয়ে রাকিবুল ইসলাম মন্তব্য করতে চাননি।
উল্টোদিকে, সিপিএম তাদের অনেকটাই ঘর গুছিয়ে নিয়েছে। ঘন ঘন ওই এলাকায় সিপিএমের যুব নেতৃত্ব থেকে মহম্মদ সেলিম করে গিয়েছেন ছোট ছোট সভা। তাছাড়া, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের বোঝাপড়াও অনেক মজবুত । ফলে জলঙ্গিতে বিধানসভা নিয়ে তৃণমূলকে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলতে পারে বাম-কংগ্রেস।
জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘‘গত বিধানসভার নির্বাচন হয়েছে এনআরসির হাওয়ায়। তাছাড়া বাম-কংগ্রেসের জোট তখন খাতায়কলমে হলেও বাস্তব অর্থে কিছুই হয়নি। ফলে প্রায় ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনে হাড়ে হাড়ে টের পাবে তারা যে কতটা পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। ফল প্রকাশের সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।