বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদের প্রচারে সেলিম । দুবরাজপুরে শুক্রবার।
দেশে সাম্প্রদায়িকতার ‘আগুন’ লেগেছে বলেই এক সঙ্গে নির্বাচনে লড়ছে বাম ও কংগ্রেস। শুক্রবার বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদের প্রচারে প্রথম বার জেলায় এসে এ কথা জানানোর পাশাপাশি একযোগে তৃণমূল এবং বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
এ দিন বিকেলে দুবরাজপুর মাদৃক সঙ্ঘের সাংস্কৃতিক ময়দানে বাম-কংগ্রেসের সমাবেশ ছিল। মিল্টন রশিদ ও সেলিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম, সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ, কংগ্রেসের জেলা কর্যকরী সভাপতি চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে কেন জোট, কেন তৃণমূল ও বিজেপি এক বন্ধনীতে— সেটা ব্যাখ্যা করেন সেলিম। দেশের নীতি, মেরুকরণ, লুট, দুর্নীতি-সহ নানা প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
সেলিম প্রশ্ন তোলেন, ‘‘দুর্নীতির প্রশ্নে ঝাড়খণ্ড ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জেলে গেলে এত দুর্নীতির পরেও কেন মততা এবং তাঁর ভাইপো বাদ?’’ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে শাসকদলের পাশাপাশি বিজেপিকেও দুষেছেন সেলিম। তিনি বলছেন, ‘‘এক লুটেরা কখনও অন্য লুটেরার বিরুদ্ধে কথা বলে না। হেমন্ত সোরেন জেলে গিয়েছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়াল জেলে গিয়েছিলেন, আজ জামিন পেলেন। তাহলে মমতা ও তাঁর ভাইপো কেন বাইরে?’’ তাঁর দাবি, কয়লা পাচার, নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচার— সব ব্যাপারে যত দুর্নীতি দেখছেন , এই সব এ ঘাট ও ঘাট ঘুরে কালীঘাটে জমা হচ্ছে। সেলিমের মন্তব্য, ‘‘আমরা বলছি কালীঘাটে গিয়ে দেখো। বিজেপি বলছে দেখব না। চুরির টাকা খেয়ে মোটা হয়ে গিয়েছে।’’
রাজ্য সরকারের স্বপ্নের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ শব্দবন্ধ নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেন সেলিম। বলেন, ‘‘এটা ভান্ডার হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকদের বাড়িতে যা পাওয়া গিয়েছে, সেটা কী! আমাদের মায়েদের হাতে ভাঁড় ধরিয়ে দিয়ে বলছে ভান্ডার। ইঁদুরকে গন্ডার বলছে আর গন্ডারকে ইঁদুর।’’ বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগেও সরব হয়েছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগলে সকলে ছুটে আসে জল নিয়ে। তখন কেউ দেখে না, কে হিন্দু, কে মুসলমান। এখন বিজেপি আর তৃণমূল সেটা নিয়েও ঝগড়া লাগায় যে, কে জল বলে আর কে পানি।’’
সেলিমের দাবি, বাম-কংগ্রেস জল আর পানির মধ্যে তফাত করে না। কে আগুন জ্বালাতে কেরোসিন আর পেট্রল নিয়ে আসছে, তার তফাত করে। সেলিমের মতে, ‘‘আজ দেশে আগুন লেগেছে। সেই জন্য বাম-কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধীরা একজোট হয়েছে।’’ অন্য দিকে, কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদ বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘ভোটের দিন কর্তব্যে বিচ্যুতি হলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’’