রবিবার দুপুরে মালদহের কালিয়াচক কৃষক বাজারের পাশের মাঠে নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: জয়ন্ত সেন।
কোথাও প্রাক্তন মন্ত্রী গনিখান চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিঁধলেন কংগ্রেসকে, কোথাও সিপিএমের সঙ্গে তুলনা টেনে আক্রমণ করলেন বিজেপিকে। রবিবার, মালদহে দ্বিতীয় দফায় ভোট প্রচারে গিয়ে হবিবপুর এবং সুজাপুরের মানিকচকের জনসভা থেকে একযোগে বিরোধীদের কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের আক্রামণের পাশাপাশি সংখ্যালঘু, আদিবাসীদের উন্নয়নের ফিরিস্তিও তুলে ধরেন তিনি।
আদিবাসী এবং সংখ্যালঘু প্রধান হবিবপুর ও সুজাপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, দাবি নেতৃত্বের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সারনা ধর্মের স্বীকৃতির জন্য আদিবাসীরা আন্দোলন করছেন। সারনা ধর্মের স্বীকৃতির জন্য চিঠিও দিয়েছি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কিছু করছে না।”
গত লোকসভা ভোটে দক্ষিণ মালদহে প্রয়াত গনি খানের ভাই কংগ্রেসের আবু হাসেম খান চৌধুরী এবং সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া খগেন মুর্মু উত্তর মালদহ থেকে জয়ী হন। এ বারের বিধানসভার ভোটে ১২টির মধ্যে আটটিতে তৃণমূল এবং চারটিতে জয়ী হয় বিজেপি। লোকসভায় এখনও তৃণমূল এই জেলায় কোনও আসন জিততে পারেনি। এ বার দলের প্রার্থীদের জেতাতে সংখ্যালঘুদের ভোট কাটাকাটি না করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। এরই সঙ্গে সুজাপুরের বিধায়ক আব্দুল গনি নিয়েও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। সুজাপুরে তিনি রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেও বিধায়ক এলাকায় থাকেন না বলে অভিযোগ। মমতা গনি প্রসঙ্গে কালিয়াচকে বলেন, ‘‘২০২১ সালে সুজাপুরে আব্দুল গনিকে জিতিয়েছিলেন আপনারা। আমি তাঁকে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানও করেছিলাম। কিন্তু শুনলাম উনি এখানে আসেন না। কারও প্রতি অভিমান করে বসে থাকবেন না। এখন থেকে সুজাপুর এলাকা আমিই দেখব।’’
এ দিন সুজাপুরের কালিয়াচকে শাহনওয়াজ আলি রায়হান এবং হবিবপুরে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিয়াচকে মমতা বলেন, ‘‘এতদিন ধরে আপনারা বরকতদাকে ভোট দিয়েছেন। তাতে কোনও আপত্তি নেই। আমিও তাঁকে সন্মান করি। বরকতদার ভাগ্নি মৌসমকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছি। প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। আর কী করব বলুন তো?’’ গনির ভাই বিদায়ী সাংসদ লোকসভায় গিয়ে চুপ করে বসে থাকেন বলেও দাবি করেন তিনি। হবিবপুরে মমতা বলেন, ‘‘সিপিএমের অত্যাচারী নেতা এখন বিজেপির সাংসদ হয়েছে। হবিবপুরে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, বিধায়ক, সাংসদ সব বিজেপি।’’ কী ভাবে উন্নয়ন হবে, প্রশ্ন করেন তিনি।
পাল্টা বিজেপির প্রার্থী খগেন মুর্মু বলেন,“আদিবাসীদের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী কিছুই করেননি। আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করে সম্মান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।” কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী বলেন,“সিএএ, এনআরসির ভয় মানুষ আর পাচ্ছেন না। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তাই মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করছেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, ‘‘ভোটের ফলাফলের পরেই স্পষ্ট হবে, মানুষ কার সঙ্গে আছেন।’’