মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
পঞ্চায়েতে জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড়াই সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। এ বারেই প্রথম অনুব্রতকে (কেষ্ট) ছাড়া বীরভূমে লোকসভা ভোটে নামছে রাজ্যের শাসক দল। আজ, মঙ্গলবার সেই ভোট-প্রচারে হাঁসনে এসে তাই দলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন সে দিকেই তাকিয়ে জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই দু’দিনের জেলা সফরে প্রশাসনিক ও কর্মী বৈঠক করেছিলেন মমতা। এ বারে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় অনুব্রত মণ্ডল থাকছেন না। ১৮ ফেব্রুয়ারি সিউড়িতে মঞ্চ থেকে অবশ্য তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ান তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী। মমতা বলেন, ‘‘বীরভূমে চক্রান্ত চলছে। কেষ্টকে কত দিন ধরে জেলে ভরে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। আমি তো আসতে আসতে দেখছিলাম, তরুণ প্রজন্ম ওর কথা বলছে। আমি কাউকে শিখিয়ে দিইনি। আমি মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম।” ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনুব্রতকে ছাড়াই তৃণমূল জেলায় ভালই সাফল্য পেয়েছে। আজ, মঙ্গলবার বীরভূমে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুব্রত নিয়ে কী বলেন তাও জানতে চান দলের নেতাকর্মীরা।
তৃণমূল সূত্রে দাবি, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বীরভূম আসনে সভা করার জন্য হাঁসন বিধানসভা এলাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বেছে নিয়েছেন। সে জন্য সভাস্থলের জায়গা ঠিক করতে দল এবং পুলিশ প্রশাসনের অনেক সময় লেগে যায় বলে খবর। প্রথমে হাঁসন কেন্দ্রের অধীন মাড়গ্রাম থানার সন্তোষপুর জোগাদ্যামাতা বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের খেলার মাঠ সভার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। পরে ছোট পরিসরের জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে সাহাপুর অঞ্চলের কড়কড়িয়া মোড় সংলগ্ন এলাকায় সভাস্থলের মাঠ ঠিক করা হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে সভাস্থলের কাছেই মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার নামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে ৭০-৭৫ হাজার কর্মী-সমর্থক উপস্থিত থাকার জন্য দলীয় ভাবে একাধিকবার কোর কমিটির সদস্যরা রামপুরহাটে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন। মুরারই, নলহাটি, হাঁসন, রামপুরহাট এই চারটি বিধানসভা এলাকা থেকে বেশি বেশি করে কর্মী সমর্থক উপস্থিত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি।
এর আগে উত্তরবঙ্গে প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরের প্রসঙ্গ তুলে শীতলখুচির ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন। মঙ্গলবারের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম কেন্দ্রে প্রচারে এসে তেমন কিছু বলেন সেটাও অনেকের নজরে আছে। আবার, সোমবার এসএসসি নিয়োগ মামলার রায়ের পর মঙ্গলবার ফের তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলেন কি না তাও দেখার। যথেষ্ট সংখ্যক সংখ্যালঘু ভোট যে কেন্দ্রে রয়েছে, সেই বীরভূম কেন্দ্রে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রীর নাগরিকত্ব আইন নিয়েও বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।