মেমারিতে অমিত শাহের সভার প্রস্ততি। ছবি: জয়ন্ত বিশ্বাস।
প্রথম দু’টি দফা ভোটের আগে বঙ্গ সফরে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চতুর্থ দফায় ভোট রয়েছে পূর্ব বর্ধমানে। দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে আজ, মঙ্গলবার দুপুরে মেমারির রসুলপুরের কাছে বিষ্ণুপুরের মাঠে সভা করার কথা শাহের। মাঠ থেকে প্রায় ছ’কিলোমিটার দূরে আমাদপুরের একটি হিমঘরের পাশে হেলিপ্যাড তৈরি করা হচ্ছে। বিজেপির দাবি, পুরো রাস্তা জুড়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখার জন্য মানুষ ভিড় করবেন। রাজ্যের সিনিয়র অফিসারদের নেতৃত্বে গোটা এলাকা জুড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। বিভিন্ন জায়গাতে সিসি ক্যামেরাও বসানো হচ্ছে।
তবে সভায় কত লোক হবে, তা নিয়ে বিজেপি নেতাদের মধ্যেই বিভ্রান্তি রয়েছে। মেমারির বিজেপি নেত্রী স্মৃতিকণা বসু বলেন, “১৫ হাজার লোকের লক্ষ্যমত্রা নেওয়া হয়েছে।” বিজেপির বর্ধমান পূর্ব লোকসভার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের আবার দাবি, “২০ হাজার লোকের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।” আর বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য, ওই লোকসভার ইনচার্জ সুনীল গুপ্তের মতে, “৩০ হাজার লোক হবে বলে আশা করছি।” এ দিন বিকালে খুঁটি পুজো করে মঞ্চ ও আচ্ছাদন তৈরির কাজ শুরু করা হয়। আমাদপুর থেকে রসুলপুর পর্যন্ত পুরো রাস্তা গেরুয়া পতাকায় মোড়া হয়েছে। বিজেপি নেতাদের দাবি, মূলত বর্ধমান পূর্ব লোকসভার মেমারি, রায়না, জামালপুর ও কালনা বিধানসভা থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভায় লোক আসবেন। কাটোয়া, পূর্বস্থলী উত্তর ও পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা থেকে কম লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
বর্ধমানের পূর্বের প্রার্থী অসীম সরকারকে নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ রয়েছে। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে পোস্টার পড়েছে। ক্ষোভ দেখিয়ে ২০১৪ সালের এই লোকসভার প্রার্থী, বিজেপির রাজ্যের নেতা তথা মেমারির বাসিন্দা সন্তোষ রায় দল ছেড়েছেন। দলের অন্দরে থাকা ক্ষোভ প্রশমিত করতে শাহ কী বার্তা দেবেন, সে দিকে নজর রয়েছে কর্মীদের। আবার বর্ধমান পূর্ব লোকসভার মেমারি, জামালপুর, কালনায় প্রায় ২৮% মতুয়া ভোট রয়েছে। জামালপুর, মেমারিতে আধার কার্ড বন্ধ করা নিয়ে যে চিঠি এসেছিল, সেই সব বিষয়েও শাহ কী বলেন, অপেক্ষায় রয়েছেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। দলের একাধিক নেতা-কর্মীদের দাবি, তৃণমূলের মূল অস্ত্র লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। তার পাল্টা প্রচার কী হবে, সেটাও জানা জরুরি।
বিজেপির জেলা সভাপতি বলেন, “রাজ্য থেকে ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তার মধ্যে বর্ধমান পূর্ব আসনটিও রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভার পরে বিজেপির সব কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়বেন।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (মেমারি ১) নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘মাঠ ভরবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখার জন্য কিছু মানুষ যেতে পারেন। তবে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকেই ভরসা করেন। মতুয়ারাও বিজেপিকে নিয়ে আতঙ্কিত।”