নন্দকুমারের খঞ্চিতে বিজেপির কর্মিসভায় প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিতেই শেষ নয়, এর পরে রাজ্যের একাধিক দফতরে চাকরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণ সামনে আসতে চলেছে বলে ইঙ্গিত শোনা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়। সেই সঙ্গে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলে ঢোকানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে আবার নাম না করেই টেনে এনেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির ঘটনা।
রবিবার নন্দকুমারের খঞ্চি হাইস্কুল ময়দানে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করেন শুভেন্দু।সেখানে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, "মাফলার ( দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল) গিয়েছেন। এ বার হাওয়াই চটির পালা।’’ এর পরেই নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুর মন্তব্য, "এসএসসি তো পহেলা ঝাঁকি হ্যায়। পিএসসি, মিউনিসিপ্যালিটি, ফায়ার ব্রিগেড অভি বাকি হ্যায়।’’ অর্থাৎ, আরও একাধিক দফতরে একই রকম দুর্নীতির বিষয় সামনে আসা বাকি রয়েছে। শুভেন্দুর মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এ দিন বলেন,"একটাও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিজেদের উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য ব্যবহার করছে বিজেপি এবং শুভেন্দুরা। বাংলার মানুষ এর জবাব দিয়ে দেবেন ইভিএমে।"
শুভেন্দু অবশ্য নিয়োগ দুর্নীতিতে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি হারানোর ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে বলেন, ’হাই কোর্ট বলেছিল, যোগ্য কারা আর অযোগ্য কারা তালিকা দাও। ৫৪০০ অযোগ্যকে বাঁচানোর জন্য ২০ হাজার যোগ্য লোককে বলি দিয়েছেন।’’
কয়েক দিন আগে মহিষাদলের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের সময়ে ‘বাপ-ছেলে’ ছিলেন না বলে মন্তব্য করছিলেন। আর এ দিন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করেই তাঁদের পিসি-ভাইপোর বদলে ‘মা-ছেলে’ বলে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু। বললেন, ’’বলছেন বাপ-ব্যাটা ছিলনা । আরে আপনার মা-ব্যাটা কোথায় ছিলেন? ৩ জানুয়ারি ( ২০০৭ সালে ) আন্দোলন শুরু হয়। আমি ছিলাম বামনচকে। ৭ জানুয়ারি সেলিমের দেহ ভাঙ্গাবেড়া সেতুর নীচে। আমি মোটরসাইকেল চালিয়ে গিয়েছিলাম। আমি (সেলিমের দেহ) তুলেছিলাম। আপনি তখন ক্যাডবেরি আর স্যান্ডুইচ খেয়ে অনশনের নামে টাটাকে তাড়ানোয় ব্যস্ত।’’
শুভেন্দু অধিকারীর ‘মা-ব্যাটা’ মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের তমলুক লোকসভা নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র বলেন,"একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ব্যক্তির এ ধরনের ভাষা প্রয়োগ মোটেই কাম্য নয়।’’এ দিনের সভায় শুভেন্দু নন্দকুমার থানার ওসি-র বিরুদ্ধে রাস্তায় গাড়ি থেকে টাকা তোলার অভিযোগ করেন। পঞ্চায়েত ভোটে নন্দকুমার ব্লকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কারচুপি করার অভিযোগও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। শুভেন্দু এ বার লোকসভা ভোটে নন্দকুমার বিধানসভা এলাকা থেকে ৫০ হাজার ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে ‘লিড’ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন।