—প্রতীকী চিত্র।
অস্ত্রের ঝনঝনানি সে ভাবে দেখা গেল না দুই জেলায় রামনবমীর মিছিলে। বেশিরভাগ মিছিলই হয়েছে বিজেপির তরফে। তবে কিছু এলাকায় তৃণমূলও রামনবমীর মিছিল করেছে।
সন্দেশখালিতে এ বার প্রথম মিছিল বেরোল রামনবমীতে। বুধবার সন্দেশখালি দ্বীপে তিনটি মিছিল হয়। সকালে লস্করপাড়া থেকে সন্দেশখালি ফেরিঘাট পর্যন্ত শতাধিক মানুষ মিছিলে হাঁটেন। বিকেলে দ্বারিরজাঙ্গল থেকে সন্দেশখালি লস্কর পাড়া পর্যন্ত আরও একটি মিছিল হয়। সিংহপাড়া থেকে ভোলাখালি খেয়াঘাট হয়ে ত্রিমনি বাজার পর্যন্ত একটি মিছিল হয় বিকেলে। বেড়মজুর, জেলিয়াখালি গ্রামেও মিছিল হয়েছে। সন্দেশখালির বিজেপি নেতা রতিকান্ত ঢালি বলেন, ‘‘এত দিন সন্দেশখালিতে রামের গান বাজানো যেত না। রামনবমী মিছিল তো হতই না। এ বার মানুষ আনন্দে মিছিল করলেন।’’ সূত্রের খবর, প্রতিটি মিছিলই হয়েছে বিজেপির উদ্যোগে।
এ বিষয়ে সন্দেশখালির বিধায়ক তৃণমূলের সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘রামনবমীর মিছিল নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। হিন্দু ধর্মের মানুষ তা করতেই পারেন। তবে এখন ভোটের আগে বিজেপিই রামনবমীর মিছিল করছে। তৃণমূলের কখনও রামনবমী পালনে বাধা দেয়নি।’’
রামনবমী উপলক্ষে বনগাঁ শহরে রামচন্দ্রের ছবি নিয়ে মিছিল করল তৃণমূল। বুধবার বিকেলে শহরের রামনগর রোডের মোড় এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়। শহর পরিক্রমা করে মিছিল শেষ হয় বাটারমোড় এলাকায়। সেখানে সভা হয়। মিছিলে হাঁটেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি নারায়ণ ঘোষ। নিউ মার্কেট এলাকায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে রামের পুজোও হয়েছে।
বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘এই পবিত্র দিনে ভগবান রামের কাছে প্রার্থনা করি, অশুভ শক্তির বিনাশ হোক। শুভ শক্তি জাগ্রত হোক। রাম কারও একার নয়। আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ হলেন রামচন্দ্র।’’
তৃণমূলের রাম পুজো এবং রামনবমীর মিছিল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। এত দিন তৃণমূল বলত রাম বিজেপির। এখন ভোটের জন্য সেই তৃণমূল রাম নাম করছে। তবে এতে কোনও লাভ হবে না। কারণ, ভগবান রামচন্দ্রও জানেন তৃণমূল তাঁকে নিয়ে নাটক করছে। তাঁর প্রতি কোনও ভক্তি-শ্রদ্ধা নেই ওদের।’’
এ দিন বিজেপির পক্ষ থেকে গোপালনগরের চৌবেড়িয়া থেকে পাল্লা এলাকায় বাইক মিছিল হয়। মহকুমার বিভিন্ন এলাকাতেও বিজেপির তরফে রামনবমীর মিছিল হয়েছে।
অস্ত্র ছাড়াই রামনবমীর মিছিল হয়েছে বাসন্তীতে। যোগ দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হিন্দু সংহতির ডাকে বুধবার সকালে মিছিল বেরোয় বাসন্তী বাজার এলাকা থেকে। শুভেন্দু হরিমন্দিরে পুজো দিয়ে পদযাত্রায় যোগ দেন। ক্যানিং ও তালদি এলাকাতেও রামনবমীর মিছিল হয় বিজেপির উদ্যোগে। তবে তৃণমূলের উদ্যোগে এলাকায় কোনও শোভাযাত্রা চোখে পড়েনি এ দিন।
বিকেলে বাদুড়িয়া থানার রুদ্রপুর থেকে বাদুড়িয়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রামনবমীর মিছিলে কয়েক হাজার মানুষ যোগ দেন। মিছিলে ছিলেন বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুকল্যাণ বৈদ্য।
সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমায় রামনবমী উপলক্ষে পুজোর আয়োজন করা হয়। সাগরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে খুদিগুড়িয়া পোল পর্যন্ত শোভাযাত্রায় যোগ দেন শতাধিক মানুষ। সাগর রামনবমী উদযাপন সমিতির সহ সভাপতি অরুণাভ দাস বলেন, ‘‘শ্রীরামের পুজো, হোম, যজ্ঞ, শোভাযাত্রা ও প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে রামনবমী পালন করা হচ্ছে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে পুজো করেছি।’’